বরিশালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ ২৮০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা!


ক্রাইম জোন ২৪।।
বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলটির ২৮০ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল মহানগর শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম সাগর বাদী হয়ে রোববার (১ জুন) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সাইদুল ইসলাম ট্যাপা, রুহুল আমিন, রত্মা আমিন, হাফিজ আহম্মেদ, ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম মাহমুদ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মাসুতউদ্দীন চৌধুরি, একেএম সেলিম ওসমান, আশরাফুজ্জামান আশু, মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৩০ জনকে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও প্রায় আড়াইশজনকে মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
শফিকুল ইসলাম সাগর বলেন, শনিবার (৩১ মে) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার দিন নগরীর ফকিরবাড়ি রোড এলাকায় ছাত্র অধিকার পরিষদের একটি হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়। বিকেলে সেখানে ছাত্র ও গণঅধিকার পরিষদের কিছু নেতাকর্মী চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় জাতীয় পার্টির বরিশাল জেলা ও মহানগর কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বের হয়, যেখানে সরকারবিরোধী ও গণঅধিকার পরিষদবিরোধী কটূক্তিপূর্ণ স্লোগান দেওয়া হয়।
সাগরের অভিযোগ, স্লোগান না দিতে অনুরোধ জানালে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সহযোগিতায় রামদা, চাপাতি, পিস্তল, রড, বাঁশ ও ইট নিয়ে অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বরিশাল জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এইচএম শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচএম হাসান, মহানগর সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন তালুকদার ফয়সাল, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ ফরাজী, সদর উপজেলা সভাপতি কে.এম. মাইনুলসহ ১৫–২০ জন গুরুতর আহত হন। আহতদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির বরিশাল মহানগর আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল জানান, রংপুরে পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বরিশালে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ফকিরবাড়ি রোড হয়ে সদর রোডের দিকে যাওয়ার পথে গণঅধিকার পরিষদের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি নিজে, জেলা সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এম এ জলিল, যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম গফুর, আক্তার রহসান সফরু ও তরুণ পার্টির আহ্বায়ক জুম্মান হায়দার আহত হন। জুম্মান হায়দারকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়, রাতেই গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা সদর রোডে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে জাতীয় পার্টিকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি জানায়। পরে তারা কাকলী মোড় হয়ে ফকিরবাড়ি রোডে গিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা চালায়। অফিসের চেয়ার, টেবিল, আলমারি ও ব্যানার-সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে চলে যায় মিছিলকারীরা।
ঘটনার দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ তুলেছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।