ফোনের ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন হ্যাক করা সহজ, হ্যাকড কি না বুঝবেন কীভাবে


বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত যেকোনো ডিভাইস হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারে—আর এর মধ্যে রয়েছে আপনার স্মার্টফোনও। ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকিং তথ্য ও কাজের সংবেদনশীল তথ্য থাকার কারণে স্মার্টফোনটি হ্যাকিং হলে ভুক্তভোগীকে বেশ বিপদেই পড়তে হয়। সাইবার অপরাধীরা ফোনের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে গোপনে আপনার ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনে প্রবেশ করে নজরদারি করতে পারে। এ জন্য ফোনে কোনো অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
হ্যাকাররা ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনের নিয়ন্ত্রণ যেভাবে নেয়
ম্যালওয়্যার ও স্পাইওয়্যার: ফিশিং ইমেইল, ভুয়া অ্যাপ কিংবা ক্ষতিকারক ওয়েবসাইট থেকে ইনস্টল হওয়া ম্যালওয়্যার ফোনে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনে গোপনে প্রবেশ করতে পারে।
অনিরাপদ অ্যাপস: কিছু অ্যাপ অতিরিক্ত অনুমতি চায়, যেখানে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনের প্রয়োজন হয় না। এসব অ্যাপ হ্যাকারদের হাত ধরে এক্সপ্লয়েটেড হতে পারে।
ফিশিং স্ক্যাম: হ্যাকাররা মিথ্যা বার্তা ও ইমেইল পাঠিয়ে আপনাকে ক্ষতিকারক লিংকে ক্লিক করানোর মাধ্যমে স্পাইওয়্যার ইনস্টল করে।
নেটওয়ার্ক আক্রমণ: অবাধে পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে মাঝেমধ্যে হ্যাকারদের আক্রমণের শিকার হতে পারেন।
সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেওয়া: কেউ যদি আপনার ফোন হাতে পান, তাৎক্ষণিকভাবে স্পাইওয়্যার ইনস্টল করে দূর থেকে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন চালু করতে পারে।
ফোনের মাইক্রোফোন হ্যাক হয়েছে বুঝবেন যেভাবে
- ফোন কলের ব্যাকগ্রাউন্ডে কোনো যান্ত্রিক শব্দ আসা
- অস্বাভাবিক গতিতে ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়া
- ফোন না ব্যবহার করলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া
- মাইক্রোফোন ব্যবহারের নির্দেশক আলো আকস্মিক জ্বলা
- ডেটার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, যা স্পাইওয়্যার অডিও ট্রান্সমিট করছে ইঙ্গিত দেয়
ফোনের ক্যামেরা হ্যাক হয়েছে যেভাবে বুঝবেন
- ক্যামেরার নির্দেশক আলো আকস্মিক জ্বলা
- অজানা ছবি বা ভিডিও গ্যালারিতে পাওয়া
- ক্যামেরা অ্যাপ ধীরগতিতে চলা বা বারবার ক্র্যাশ হওয়া
- কোনো অ্যাপ আকস্মিকভাবে ক্যামেরার অ্যাকসেস চাওয়া
নিরাপদ থাকতে যা করবেন
- নিয়মিত অ্যাপ পারমিশন পর্যালোচনা করুন এবং প্রয়োজন ছাড়া ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন অনুমতি সরিয়ে দিন
- শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও ফেসিয়াল রিকগনিশন ব্যবহার করুন
- বিশ্বস্ত সিকিউরিটি অ্যাপ ইনস্টল করুন
- কেবল অফিশিয়াল অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করুন
- ক্যামেরা ব্যবহার না করলে তার ওপর স্টিকার বা ক্যামেরা কাভার ব্যবহার করুন
অতিরিক্ত নিরাপত্তা পরামর্শ
- ফোনের বিভিন্ন অ্যাপের অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (২ এফএ) ব্যবস্থা চালু করুন, যা আপনার অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত সুবিধা দেয়।
- সফটওয়্যার আপডেট নিয়মিত করুন এবং অব্যবহৃত অ্যাপ পারমিশন বাতিল করুন।
- ফিশিং স্ক্যাম থেকে সতর্ক থাকুন; সন্দেহজনক লিংক ও মেসেজ এড়িয়ে চলুন।
- পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করার সময় ভিপিএন ব্যবহার করুন, যা আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করে।
- স্মার্টফোন একটি শক্তিশালী টুল হলেও সঠিক নিরাপত্তা না থাকলে এটি হ্যাকারদের জন্য প্রবেশদ্বার হয়ে উঠতে পারে। সচেতনতা ও নিরাপত্তাব্যবস্থায় নজর রেখে আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও গোপনীয়তা সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।
ক্রাইম জোন ২৪