সভা করতে বসলেই সম্মানী ১২ হাজার


রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বোর্ড সভায় অংশ নিলেই কর্মকর্তারা সম্মানী পাবেন ১২ হাজার টাকা। ৩ হাজার টাকা থেকে একলাফে চার গুণ বাড়িয়ে সম্মানীর এই অঙ্ক নির্ধারণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাসে বর্তমানে একটি সভার ব্যবস্থা থাকলেও তা একাধিকবার হতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই সম্মানী বাড়ানোর আলোচনা চলছিল। সেই ধারাবাহিকতায় গত ৮ জুলাই সংস্থাটির ৯ম বোর্ড সভায় তা নীতিগত অনুমোদন করা হয়। সম্মানীর নামে বেতনভুক্ত কর্মকর্তাদের সরকারি টাকা পকেটে নেওয়ার এমন সিদ্ধান্তের পর খোদ রাজউক ভবনেই চলছে নানা সমালোচনা।
জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি অন্য সংস্থা কেউ কেউ ১৫ হাজার টাকাও সম্মানী নিয়ে থাকেন। তাই আমরা চিন্তা করছি রাজউকের সম্মানী বাড়ানোর বিষয়টি। সেটা ১২ হাজার টাকার প্রস্তাব এসেছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
রাজউকের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত মাসের ৮ তারিখে রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে একটি বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বলা হয়, বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের সভায় অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সম্মানী ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। রাজউকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বা পর্যবেক্ষক জনপ্রতি ৬ হাজার টাকা এবং সভায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ৩ হাজার করে টাকা পেয়ে থাকেন। ২০২৫ সালের ৩য় বোর্ড সভায় সাধারণ ও বিশেষ সভায় অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সম্মানী বাড়ানোর জন্য মৌখিকভাবে সবাই মতামত দেন। বোর্ড সভার সিদ্ধান্তে সম্মানীর টাকা বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে বলা হয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের আওতাধীন কোম্পানিগুলোর প্রতি সভায় জনপ্রতি আয়কর ব্যতীত ১২ হাজার সম্মানী দেওয়া হয়।
রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সংস্থাটির একজন প্রভাবশালী সদস্য যোগদানের পর থেকেই সম্মানী বাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু নানা সমালোচনার মুখে তা করতে পারেননি। তবে শেষ পর্যন্ত তা পাস করিয়ে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) ড. মো. আলম মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের একজন সদস্য কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় সম্মানী বাড়ানোর প্রস্তাব উপস্থাপন করলে আমরা এ বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি চূড়ান্ত অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত আগের নির্ধারিত হারেই সম্মানী বহাল থাকবে। এটা আমার একার চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত বলে যারা প্রচার করছে, তাদের বিষয়েও আমি অবগত আছি।’