শিরোনাম

অন্যদের বাঁচাতে প্রাণ দিলেন বাংলাদেশি দিদারুল, দেখা হলো না অনাগত সন্তানের মুখ

অন্যদের বাঁচাতে প্রাণ দিলেন বাংলাদেশি দিদারুল, দেখা হলো না অনাগত সন্তানের মুখ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে এক বহুতল ভবনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন নিউইয়র্ক পুলিশে এক কর্মকর্তা। তাঁর নাম দিদারুল ইসলাম। ৩৬ বছর বয়সী এই পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন বাংলাদেশি অভিবাসী। কর্তব্য পালন করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করা এই পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘নায়ক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নিউইয়র্ক শহরের মেয়র এরিক অ্যাডামস এবং পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার। ঘটনাস্থল ছিল—নিউইয়র্কের মিডটাউনের একটি অফিস টাওয়ার। পুলিশ জানিয়েছে, এক বন্দুকধারী হঠাৎ করে গুলি চালাতে শুরু করে। এতে দিদারুল ইসলামসহ মোট চারজন নিহত হন। পরে বন্দুকধারী নিজেই আত্মহত্যা করেন।

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস সোমবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আরেকটি নিরর্থক বন্দুক হামলায় আমরা চারজনকে হারিয়েছি। তাঁদের একজন আমাদেরই পুলিশ কর্মকর্তা—অফিসার (দিদারুল) ইসলাম। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যদের রক্ষা করছিলেন।’

মেয়র আরও বলেন, ‘তিনি নিউইয়র্ক শহরকে ভালোবাসতেন। তিনি আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেন। আমি তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি তাঁদের বলেছি, দিদারুল ইসলাম একজন সত্যিকারের নায়ক। আমরা তাঁর আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’

পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ বলেন, ঘটনার সময় অফিসার দিদারুল ইসলাম একটি বেতনভিত্তিক নিরাপত্তা দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এই ধরনের দায়িত্বে পুলিশ অফিসাররা ইউনিফর্ম পরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘অফিসার দিদারুল ইসলাম নিজের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ঠান্ডা মাথায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এটা ছিল এক নিঃসন্দেহে নৃশংস হত্যাকাণ্ড।’

কমিশনার জানান, দিদারুল ইসলাম ছিলেন একজন পারিবারিক মানুষ। তাঁর দুই শিশু সন্তান রয়েছে। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী, তাঁদের তৃতীয় সন্তান পৃথিবীতে আসার অপেক্ষায়।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ল অ্যান্ডফোর্সমেন্ট অফিসার্স মেমোরিয়াল ফান্ডের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দিদারুল ইসলামকে বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার অন্তত ৪২ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনের সময় প্রাণ হারিয়েছেন।

এই ঘটনা নিউইয়র্ক শহর ও বাংলাদেশি অভিবাসী কমিউনিটিতে শোকের ছায়া ফেলেছে। অনেকেই দিদারুল ইসলামের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন—একজন সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে যিনি অন্যদের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন দিয়ে গেছেন।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button