বেহাল সড়কে চরম ভোগান্তি


দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় রাজধানীর জুরাইন-দয়াগঞ্জ সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। সড়কের গেন্ডারিয়া রেলস্টেশনের সামনের অংশে অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এসব খানাখন্দ কোথাও কোথাও এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত গভীর। বৃষ্টির পানি জমে সেসব গর্ত পুকুরের রূপ ধারণ করেছে। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন যানের চালক, যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রায় প্রতিদিনই যানবাহন উল্টে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বেহাল সড়কে চলতে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে ঢাকায় ঢোকার পর জুরাইন থেকে স্বল্প সময়ে গুলিস্তান ও মতিঝিল যাওয়ার সহজ পথ জুরাইন-দয়াগঞ্জ সড়ক। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে অসংখ্য যানবাহন। কিন্তু সড়কটিতে অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বিশেষ করে বৃষ্টিতে এই ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ধীরগতিতে যানবাহন চলায় সৃষ্টি হয় যানজটের।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, জুরাইন-দয়াগঞ্জ সড়কের গেন্ডারিয়া রেলস্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার অনেকাংশ ভেঙেচুরে গেছে। সড়কের একটু পরপর বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় দেখে বোঝার উপায় নেই গর্তগুলো কতটা গভীর। ফলে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে প্যাডেলচালিত রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানসহ অন্য পরিবহনগুলোকে। আর ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে যানবাহন উল্টে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
রাস্তার পাশের চা-দোকানি আরাফাত জানান, প্রতিদিনই দু-চারটি রিকশাসহ ছোট যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। ফলে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা আহত হয়। পথচারী আজাদ বলেন, রাস্তাটি এতই বেহাল যে, বড় গাড়িই উল্টে যেতে চায়। অন্যদিকে হেঁটে চলাও একেবারেই অসম্ভব।
কথা হলে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা আজকের পত্রিকাকে জানান, তিন বছর ধরে রাস্তার এ করুণ অবস্থা। প্রতিদিনই চোখের সামনে দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
লেগুনাচালক মামুন বলেন, ‘প্রতিদিন অনেকবার এই রাস্তা দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। আর বৃষ্টি হলে এই ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তখন গাড়ি চালাতে পারি না। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার না করলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাস্তাটির ব্যাপারে আমরা অবগত আছি। ইতিমধ্যে আমাদের কর্মকর্তারা রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
সংস্কারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
এদিকে, জুরাইন-দয়াগঞ্জ সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ‘জুরাইন-শ্যামপুর-কদমতলী ছাত্র-জনতা ঐক্য’—এই ব্যানারে গতকাল শনিবার সকালে সড়কের ভাঙা অংশের কাছে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজকর্মীরা অংশ নেন। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সাগর ইসলাম, হাফিজুল ইসলাম সানি, আল মাহাদিসহ কয়েকজন জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই রাস্তার সংস্কার না হলে প্রতিবাদে প্রয়োজনে জুরাইন মূল রাস্তা ও রেলপথ অবরোধ করা হবে।