শিরোনাম
জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে অনেক অর্জন হয়েছে: শেখ বশিরউদ্দীনজীবন আহমেদের ক্যামেরায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানর‍্যাব বলছে হত্যা, পুলিশ বলছে চুরিআল-আরাফাহ ব্যাংকে চাকরিচ্যুতদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের সংঘর্ষশান্ত হয়ে যাচ্ছে নীল তিমিরা, দুশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরাচীনের চর সন্দেহে ইন্টেল সিইওর অপসারণ চাইলেন ট্রাম্পপবিপ্রবিতে জুনিয়রকে পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়ায় ছাত্র উপ-উপদেষ্টার পদত্যাগচাঁদপুরে পিকআপ–মোটরসাইকেল সংঘর্ষে ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যুআকাশসীমায় বেসামরিক ফ্লাইটের বিদ্যমান ঝুঁকি নিরসন করতে হবে, গোলটেবিলে বক্তারাপ্রকাশিত সংবাদ নিয়ে শিবিরের ঢাবি শাখার প্রতিবাদ

২০২৪ সালে জাপানে জন্মের চেয়ে ৯ লাখ বেশি মৃত্যু ঘটেছে

২০২৪ সালে জাপানে জন্মের চেয়ে ৯ লাখ বেশি মৃত্যু ঘটেছে

২০২৪ সালে জাপানে যত শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, তার তুলনায় ৯ লাখ বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ১৯৬৮ সালে এই ধরনের সরকারি পর্যবেক্ষণ শুরুর পর থেকে এটি ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় বার্ষিক জনসংখ্যা হ্রাসের ঘটনা। এই পরিস্থিতিকে জাপানের দীর্ঘমেয়াদি জনসংখ্যা সংকটের এক গভীর ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিবিসি জানিয়েছে, এই অবস্থাকে ‘নীরব জরুরি অবস্থা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি পরিবারবান্ধব নানা নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে বিনা মূল্যে শিশু যত্নসেবা ও কর্মঘণ্টায় আরও নমনীয়তা আনার পরিকল্পনা।

গতকাল বুধবার জাপানের স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গেছে ২০২৪ সালে দেশটির জাতীয় নাগরিকের সংখ্যা ৯ লাখ ৮ হাজার ৫৭৪ জন কমেছে। ওই বছরটিতে জন্ম হয়েছে মাত্র ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬১টি শিশুর—যা ১৮৯৯ সাল থেকে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর সর্বনিম্ন। একই সময়ে মারা গেছে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ। অর্থাৎ প্রতি শিশুর জন্মের বিপরীতে মৃত্যু ঘটেছে দুজনেরও বেশি মানুষের।

এটি টানা ১৬ তম বছর যেখানে জাপানের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে দেশের পেনশন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থায় প্রচণ্ড চাপ পড়ছে।

অন্যদিকে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত জাপানে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকের সংখ্যা বেড়ে ৩৬ লাখে পৌঁছেছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ। বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে দেশটির সরকার ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা চালু করেছে এবং দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিদেশি শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে। তবে অভিবাসন এখনো দেশটির রক্ষণশীল রাজনীতিতে একটি স্পর্শকাতর ইস্যু।

২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের শুরুতে দেশটির মোট জনসংখ্যা ০.৪৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ১২ কোটি ৪৩ লাখে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জাপানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশই ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী। বয়স্ক জনগোষ্ঠীর এই হিসেব অনুযায়ী, এটি মোনাকোর পর বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ ছাড়া জাপানে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমে ৬০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

সরকারি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জনসংখ্যা কমতে থাকার কারণে বিগত দুই দশকে জাপান জুড়ে প্রায় ৪০ লাখ ঘরবাড়ি পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। অনেক শহর ও গ্রাম কার্যত জনমানবশূন্য হয়ে যাচ্ছে।

জাপান সরকার বিগত কয়েক দশক ধরে জন্মহার বাড়াতে নানা উদ্দীপনা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাড়িভাড়ায় ভর্তুকি থেকে শুরু করে পিতা-মাতার ছুটিতে বেতন দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু গভীর সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বাধা এখনো রয়ে গেছে।

দেশটির উচ্চ জীবনযাপন ব্যয়, স্থবির মজুরি এবং কঠোর কর্মসংস্কৃতি অনেক তরুণ-তরুণীকেই পরিবার শুরু করার পথে নিরুৎসাহিত করছে। বিশেষ করে, নারীরা এখনো প্রথাগত লিঙ্গভিত্তিক ভূমিকার কারণে প্রাথমিক অভিভাবক হিসেবে প্রয়োজনীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন।

জাপানের প্রজনন হার বা একজন নারীর গড় সন্তানসংখ্যা ১৯৭০-এর দশক থেকেই নিম্নমুখী। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটিতে এখনই বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন এলেও এর ফল পেতে কয়েক দশক সময় লাগবে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button