শিরোনাম

চীনের চর সন্দেহে ইন্টেল সিইওর অপসারণ চাইলেন ট্রাম্প

চীনের চর সন্দেহে ইন্টেল সিইওর অপসারণ চাইলেন ট্রাম্প

ইন্টেলের নতুন প্রধান নির্বাহী (সিইও) লিপ-বু তানের পদত্যাগ দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তানকে ‘চরম বিরোধপূর্ণ’ একজন ব্যক্তি বলে অভিহিত করেছেন। চিনের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে তানের সম্পর্কের কারণে ইন্টেলের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প তাঁর সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে লিখেছেন, ‘ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী চরমভাবে দ্বন্দ্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি। সে চীনের হয়ে গুপ্ত চোরের (চর) কাজ করে। তাঁকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। এ ছাড়া এই সমস্যার আর কোনো সমাধান নেই।’ ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরপরই ইন্টেলের শেয়ার মূল্য প্রায় ৩ শতাংশ কমে যায়।

গত এপ্রিলে রয়টার্স এক বিশেষ প্রতিবেদনে প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লিপ-বু তানের সঙ্গে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। তান কমপক্ষে আটটি চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন, যেগুলো সরাসরি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সঙ্গে যুক্ত।

এদিকে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন রিপাবলিকান সিনেটর টম কটন ইন্টেলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। চিঠিতে তিনি তানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক এবং তার পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠান ক্যাডেন্স ডিজাইনকে ঘিরে একটি সাম্প্রতিক ফৌজদারি মামলার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর পদত্যাগের দাবি এক বিরল ঘটনা। ল্যাডিনবার্গ থালম্যান অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী ফিল ব্ল্যাঙ্ক্যাটো বলেন, ‘কোনো কোম্পানির প্রধান কে হবেন, সেই নির্দেশ দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট—এটা একটা দুর্ভাগ্যজনক নজির তৈরি করবে। তবে অবশ্যই তাঁর মতামতের গুরুত্ব আছে।’

এ বিষয়ে জানতে রয়টার্স ইন্টেল ও লিপ-বু তানের যোগাযোগ করলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে ইন্টেল জানিয়েছিল, কোম্পানি ও এর প্রধান নির্বাহী যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় তাদের ভূমিকার প্রতি গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ইন্টেলের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তান কোম্পানিটির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বেশ কিছু কৌশল গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে কর্মী ছাঁটাই ও বিশ্বব্যাপী বেশ কিছু উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে।

তবে চিনের সঙ্গে তানের পুরোনো বিনিয়োগ এবং ক্যাডেন্স ডিজাইনের ফৌজদারি মামলা নিয়ে ওঠা প্রশ্ন ইন্টেলের জন্য নতুন করে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বার্নস্টেইনের বিশ্লেষক স্টেসি রাসগন বলেছেন, ‘আমরা মনে করি না লিপ-বু চীনের চর, কিন্তু বর্তমান প্রশাসনের প্রেক্ষাপটে চীনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক একটি খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করছে।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button