শিরোনাম

১৫ বছরে উপদেষ্টাদের কেউ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি: মেজর হাফিজ

১৫ বছরে উপদেষ্টাদের কেউ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি: মেজর হাফিজ

বিগত ১৫ বছর বর্তমান উপদেষ্টাদের কেউ শেখ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ। আজ শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (আইইবি) এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতিতে শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মাননা জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) ঢাকা কেন্দ্র।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর হাফিজ বলেন, ‘আজ একজন শহীদের পিতা বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদেরা যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন দিয়েছে, আজও তা অর্জিত হয়নি। এটা অত্যন্ত বেদনার কথা। আমি মনে করি, এর কারণ হলো বর্তমানে যে সরকার আছে, তারা কেউই জুলাই চেতনাকে ধারণা করে না। বিগত ১৫ বছর বর্তমান উপদেষ্টাদের কেউ শেখ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি কথা বলেননি। শুধু উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মাঝে মাঝে দুই-একটি কথা বলেছেন।’

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে ভোট হওয়ার জন্য কেউ জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে জীবন দেয়নি। জনগণ চেয়েছে গণতন্ত্র। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো নির্বাচন। সাধারণ জনগণ এলাকায় নেতা হিসেবে তাকেই চান যাকে তাঁরা চেনেন, সব সময় পাশে পাবেন। কিন্তু শুধু মার্কা দিয়ে তাঁকে কীভাবে চিনতে পারবেন? পিআর পদ্ধতিতে দেখা যাবে, ভোলায় যে সংসদ হবে, তার বাড়ি কুড়িগ্রামে।’

হাফিজ আহমদ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্যে কমিশনের সংলাপে বিএনপি একদিকে, আর অন্যদিকে ৩৪ দল। বিএনপির জনসমর্থন কত আর ৩৪ দলের জনসমর্থন কত এটা দেখা হোক।…মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ’৭২ সালের সংবিধানকে তারা ছুড়ে ফেলে দিতে চায়।’

অনুষ্ঠানে তরুণদের দল এনসিপির সমালোচনা করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, ‘আজকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে একটি গোষ্ঠী নিজেদের করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। একটি মহল বিচার ও সংস্কারের নামে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ক্ষমতার লোভে পড়ে নতুন দল শহীদ পরিবারকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।’

বিএনপির নির্বাহী কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, ‘বর্তমানে কথায় কথায় জুলাই বিপ্লবকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) নামে গোপনে গোপনে চাঁদাবাজি চলছে।’

সাভারের শহীদ আসাদুল ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমার সন্তান নিহত হলো পুলিশের গুলিতে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা বিচার দৃশ্যমান কিছুই দেখতে পারছি না। যে বাহিনী সরাসরি হত্যার সঙ্গে জড়িত, তারা কীভাবে তদন্ত করবে?’

শহীদ রবিউল ইসলাম লিমনের চাচা মোল্লা আহমেদ সাইদ টুলু বলেন, ‘মা-বাবা বোঝে তার সন্তান হারানোর বেদনা। গত এক বছরের জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার কতটুকু দৃশ্যমান হয়েছে? আমরা আদৌ বিচার পাব কি না জানি না।’

আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জে এম জাহিদ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুস সোহবান, প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (অ্যাব) সাবেক মহাসচিব আলমগীর হাসিন আহমেদ, আইইবি সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রফেসর ড. সাব্বির মোস্তফা খান, আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সদস্য প্রকৌশলী লোকমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের শহীদ ওয়াসিম আকরাম, আসাদুল ইয়ামিন, রবিউল ইসলাম লিমন, রাব্বি মিয়া, রাকিব হোসাইন, আহনাফ আবির, অয়ন ও রুদ্রের পরিবারকে সম্মাননা দেওয়া হয়। গণ-অভ্যুত্থান শহীদ ও আহতদের জন্য কোরআন তিলাওয়াত এবং দোয়া করা হয়। এ ছাড়া প্রদর্শিত হয় আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ তিন মেয়াদের গুম-খুন, নির্যাতন ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button