শিরোনাম
ইতালির মর্যাদাপূর্ণ চিভিতেলা রানিয়েরি ফেলোশিপ পেলেন কথাসাহিত্যিক মশিউল আলমফেসবুক পোস্টের জেরে আড়াইহাজারে ২ ইউপি সদস্যের বাড়িতে হামলা, লুটপাটচাঁপাইনবাবগঞ্জে দিনে দোকানে চুরিভারত-যুক্তরাজ্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আড়ালেপাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে চীনের তৈরি অত্যাধুনিক মাল্টিরোল অ্যাটাক হেলিকপ্টার জেট-১০টাঙ্গাইলে চাঁদা দাবির অভিযোগে বিএনপির গ্রেপ্তার হওয়া ৩ নেতা বহিষ্কারবিদ্যুতায়িত ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল মায়েরওতারেক রহমান রাজনৈতিকভাবে অপ্রতিরোধ্য: ব্যারিস্টার হেলালপাকিস্তানের সামরিক বহরে অ্যাটাক হেলিকপ্টার, ঘুরে দেখলেন আসিম মুনিরদুই বছর ধরে ঔষধ প্রশাসনে ঝুলে আছে এক হাজার ওষুধের নিবন্ধন

দুই বছর ধরে ঔষধ প্রশাসনে ঝুলে আছে এক হাজার ওষুধের নিবন্ধন

দুই বছর ধরে ঔষধ প্রশাসনে ঝুলে আছে এক হাজার ওষুধের নিবন্ধন

বাংলাদেশে বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় এক হাজার ওষুধের নিবন্ধন আবেদন দুই বছরের বেশি সময় ধরে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে ঝুলে আছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির (বিএপিআই) নেতারা। এদিকে আগামী বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বাণিজ্যবিষয়ক মেধাস্বত্ব আইন (ট্রিপস) পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। তখন ওষুধ কোম্পানিগুলোকে উচ্চ হারে রয়্যালটি দিতে হবে অথবা পেটেন্ট নিতে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে, যা কঠিন ও ব্যয়বহুল।

আজ শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের এক মতবিনিয়ম সভায় এসব কথা বলেন ওষুধ শিল্পের উদ্যোক্তারা।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ডেল্টা ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন, ঔষধ শিল্প সমিতির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইউনিমেড ইউনিহেলথের চেয়ারম্যান এম মোসাদ্দেক হোসেন, রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ কায়সার কবির, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ এবং হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ হালিমুজজামান।

ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়শীল দেশের তালিকায় বাংলাদেশ প্রবেশ করবে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর। তবে বাংলাদেশ আরেকটা কনভেনশনে সাইন করা আছে। ফলে ২০২৫ সালের নভেম্বরের পর নতুন কোনো ওষুধ আনতে ডব্লিউটিওর বাণিজ্যবিষয়ক মেধাস্বত্ব আইন (ট্রিপস) চুক্তি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। ফলে আগামী সাড়ে তিন মাস পর নতুন ওষুধ আনতে কোম্পানিগুলোকে উচ্চ হারে রয়্যালটি দিতে হবে অথবা পেটেন্ট নিতে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে, যা কঠিন ও ব্যয়বহুল। যদিও অন্তত এক হাজার ওষুধ নিবন্ধনের অপেক্ষায় করছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে এটা দুই বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলিয়ে রাখছে। আমরা বলছি নভেম্বরের আগে যা আছে সব ওষুধের নিবন্ধন দিয়ে দিক। বাংলাদেশে যাতে পরে বলতে পারে আমাদের নিবন্ধিত ওষুধ মেধাস্বত্ব আইন প্রয়োগ হবে না।’

সৈয়দ কায়সার কবির বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশে প্রবেশ শুধু ওষুধশিল্পের জন্য খারাপ তা নয়, এটা গোটা বাংলাদেশের জন্য খারাপ হবে। প্রথমত ট্রিপস সুবিধাবঞ্চিত হবে। দ্বিতীয়ত স্বল্পসুদে ঋণ পাবে না। তৃতীয়ত ওষুধের পেটেন্ট সুবিধা মিলবে না। তাই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার দাবি ব্যবসায়ীদের। কম্বোডিয়া ও সেনেগালের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, তারা গ্র্যাজুয়েশন পেলেও অনেক লুপহোলের (ফাঁকফোকর) কারণে ট্রান্সজিশন দেরি করেছে। বাংলাদেশের সে বিষয়ে আগ্রহ নেই। আমাদের এখন দরকার প্রথমে গ্র্যাজুয়েশন ঠেকানো। কোনো কারণে যদি এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন (উত্তরণ) পেছানো না যায়, নিদেনপক্ষে ট্রান্সজিশনটা (মধ্যবর্তী সময়) তিন-চার বছর পেছানো উচিত, সেনেগাল বা কম্বোডিয়া যেমন করেছে। আমাদের এখন বেশি প্রয়োজন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়া। যদি এ সরকার না করে তাহলে নির্বাচিত সরকার আসার পর যেন এটা করে।’

এদিকে সরকার ২০০৭ সালে ওষুধের মূল কাঁচামাল অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) শিল্প তৈরির উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বাউসিয়া এলাকায় ২০০ একর জমি বরাদ্দ দেয়। এর নাম দেওয়া হয় ‘এপিআই শিল্পপার্ক’। পার্কের জমি ২৭টি ওষুধ কোম্পানিকে ৪২টি প্লটে ভাগ করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কোনো কোম্পানি একাধিক প্লট বরাদ্দ নেয়। কিন্তু গত দেড় দশকে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান সেখানে কাজ শুরু করেছে।

এ বিষয়ে ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেন বলেন, ‘কোম্পানিগুলো ২০১৭ সালে প্লট বরাদ্দ পাওয়ার টেকনোলজি আদান-প্রদানে ভারত, চীনসহ বেশ কিছু দেশে যোগাযোগ করে। চায়নারা লট দেখে জানায় আকার খুবই ছোট। এ ছাড়া এপিআই রিঅ্যাক্টর, স্টোরেজ ও সলভেন্সির জন্য যে ক্যাপাসিটি (সক্ষমতা) দরকার পার্কে সব ধরনের সুবিধা নেই। সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্যাস সরবরাহ নেই। ফলে অনেক কোম্পানি যায়নি। যারা যাচ্ছে না, তাদের প্লটগুলো একসঙ্গে করে কয়েকটি কোম্পানি কাজ শুরুর চেষ্টা করছে। সরকার নীতিমালা সংশোধন করে দিয়েছে। এখন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের যাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করা যায়, ২০২৬ সালের মধ্যে ১০ থেকে ১২টা কোম্পানি ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।’

এদিকে সম্প্রতি জাতীয় পর্যায়ে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রণয়ন ও জনগণের জন্য তা সহজলভ্য করতে করণীয় নির্ধারণে একটি উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button