শিরোনাম

তপ্ত পাথরে বসতেই ১০ সেকেন্ডেই পুড়ে গেল নিতম্ব, লাগল সার্জারি

তপ্ত পাথরে বসতেই ১০ সেকেন্ডেই পুড়ে গেল নিতম্ব, লাগল সার্জারি

চীনের হুবেই প্রদেশের শিয়াংইয়াং শহরে ঘটেছে এক আজব দুর্ঘটনা। বাগানে কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে একটি পাথরে বসেছিলেন ৭২ বছর বয়সী এক নারী। বসতেই গরমের আঁচ টের পেলেন খুব ভালোমতো! মাত্র ১০ সেকেন্ডেই তাঁর নিতম্ব পুড়ে গেল। যেনতেন পোড়া নয়, রীতিমতো ‘থার্ড ডিগ্রি বার্ন।’ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

সাধারণত, থার্ড ডিগ্রি বার্ন বলতে—পোড়ে যাওয়ার সবচেয়ে গুরুতর অবস্থা, যা ত্বকের তিনটি স্তরকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। এতে ত্বক সাদা, চামড়ার মতো, বা পোড়া হতে পারে এবং ব্যথা নাও হতে পারে। কারণ, এমনটা হলে স্থানীয় স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

হংকং থেকে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটে ৭ জুলাই। সেদিন সকালবেলা নিজের সবজির বাগানে কাজ করছিলেন ওয়াং ও নামের ওই নারী। সূর্য তখন তেজদীপ্ত, শিয়াংইয়াংয়ের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুঁই। অনেকক্ষণ কাজের পর তিনি বিশ্রাম নিতে গিয়ে একটি পাথরের ওপর বসেন।

কিন্তু ওই পাথর সূর্যের তাপে এমন গরম হয়ে উঠেছিল যে, সেটি যেন ছিল একটুকরো উনুন! বসার সঙ্গেসঙ্গে তিনি চেঁচিয়ে ওঠেন, কিন্তু পায়ের সমস্যার কারণে সঙ্গে সঙ্গে উঠতেও পারেননি। এই কয়েক সেকেন্ডেই পাথরের উত্তাপে চামড়া পুড়ে যায়!

পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, এটি থার্ড ডিগ্রি বার্ন। মানে, চামড়ার পুরো স্তরটাই নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসায় শুধু ওষুধে চলবে না, অপারেশন করে মৃত টিস্যু কেটে বাদ দিতে হবে। তারপর স্কিন গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে নতুন চামড়া প্রতিস্থাপন করতে হবে।

স্থানীয় হাসপাতালের বার্নস বিভাগের প্রধান কিয়ান বেন বলেন, ‘থার্ড ডিগ্রির বার্ন বা পোড়া মানে শরীরের সেই অংশ নিজে নিজে আর সারতে পারবে না। অস্ত্রোপচার করতেই হবে।’ পরে ওয়াংয়ের অপারেশন সফলভাবে শেষ হয়। এখন তিনি স্থিতিশীল অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তবে দীর্ঘমেয়াদে তাঁর পেশি বা ত্বকে কোনো জটিলতা হবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এই ঘটনা সামনে আসতেই চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে ওই নারীর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ নিজের অভিজ্ঞতার কথাও লিখেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘একবার গরম ব্যাটারিচালিত সিটে বসে আমারও ত্বক পুড়ে গিয়েছিল!’ আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘গরমে এখন পাথরও বিশ্বাস করা যায় না!’

চিকিৎসকেরা বলছেন, তাপপ্রবাহের সময় পাথর, লোহা, সিমেন্ট বা মেটাল জাতীয় জিনিস রোদের নিচে প্রচণ্ড গরম হয়ে ওঠে। সেখানে হুট করে বসে পড়া বা হাত দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই গরমের দিনে যেখানে-সেখানে বসার আগে সাবধান! পাথর মনে হলেও সেটা যেন না হয় আগুনের চেয়েও ভয়ানক। না হলে দাদি মায়ের মতো ১০ সেকেন্ডেই আপনারও লাগতে পারে তৃতীয় ডিগ্রির পোড়া!



আরও দেখান
Back to top button