‘শিশুহত্যাকারী জায়নবাদী শক্তি’র বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ঐক্যের ডাক ইরানের


জাতিসংঘসহ অন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জায়নবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইরান। আজ সোমবার তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রকে মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন—যদি আপনি জাতিসংঘ সনদ, আইনের শাসন, আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিশ্বাস করেন, তাহলে এখনই আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। শুধু কথায় আর চলবে না, এখন সময় কার্যকর উদ্যোগের।’
কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি বাধ্যতামূলক প্রস্তাব পাস করানোর প্রচেষ্টা জোরদার করতে মিত্র দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘জায়নবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপই প্রতিবাদের প্রথম ধাপ। বিশ্বকে জানিয়ে দিতে হবে যে এই আগ্রাসন ভিত্তিহীন। ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।’
সম্মেলনে বাঘাই আরও বলেন, আগ্রাসী শক্তি ও ভুক্তভোগীদের একই কাতারে রাখা যায় না। মোড়ল শক্তিগুলোকে দ্বিচারিতা না করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়েছে। তারা ইস্পাহান-সহ আরও কয়েকটি অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, চর্চা ও নীতিমালার সরাসরি লঙ্ঘন। এই আগ্রাসনের সূচনা করেছে জায়নবাদীরা। তারা আমাদের বিজ্ঞানীদের এবং নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে।’
এ সময় তিনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেশ কয়েকজন বেসামরিক মানুষের ছবি তুলে ধরেন। এসব ছবির মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুর ছবিও ছিল। তিনি বলেন, ‘জায়নবাদী শক্তি বরাবরই নিরীহ শিশুদের হত্যায় অভ্যস্ত, ঠিক যেমনটি তারা গাজায় করছে।’
বাঘাই আরও বলেন, ইরানের ওপর ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, তা শুধু ইরানের বিরুদ্ধে নয়—এই হামলা মূলত মানবতার বিরুদ্ধেই। তিনি বলেন, ‘এটি একটি অপরাধী গোষ্ঠীর সুনির্দিষ্ট আগ্রাসন। এর মাধ্যমে তারা মূলত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আইনকেই চ্যালেঞ্জ করেছে।’
এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন, যারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলেন, তাঁদের এখনই এই নিষ্ঠুর, নির্মম অপরাধ বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে—জায়নবাদীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে তাদের।’