মার্কিন পপতারকা কেটি পেরি কেন এত সুন্দর? কারণ জেনে নিন


কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও যুক্তরাষ্ট্রের পপ তারকা কেটি পেরি একান্তে দেখা করেছিলেন। গত ২৮ জুলাই মনট্রিলের রেস্তোরাঁ লে ভিওলনে জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দেখা করার জন্য কেটি পাড়ি দিয়েছিলেন প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার পথ!
এই বিশেষ ঘটনার কারণে মার্কিন এই তারকা সংগীত শিল্পীর নাম এখন বেশ চর্চার মধ্যে রয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে নানান গুঞ্জন ছড়ালেও আদতে তাঁরা কেন দেখা করেছিলেন, তা জানা যায়নি। কিন্তু কেটি পেরি এ ঘটনায় নেটিজেনদের নজরে পড়েছেন নতুন করে।

কিছুদিন পর পর হেয়ারস্টাইল বদলে ফেলা কেটি পেরির বয়স এখন ৪০ বছর। দেখতে এখনো ঠিক প্রেমে পড়ার মতোই আছেন তিনি। ট্রুডো কি তবে তাঁর প্রেমেই পড়লেন? এ প্রশ্নের মতোই নেটিজেনদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, চল্লিশের কোঠার এই পপস্টার কোন গোপন উপায়ে ত্বক উজ্জ্বল ও দাগমুক্ত রেখেছেন কিশোরীদের মতো? বিভিন্ন তথ্য ঘেঁটে জানা গেছে,
একটি বিশেষ স্কিনকেয়ার পণ্য বদলে দিয়েছে তাঁর ত্বক
২০১১ সালে টিভি পর্দায় পেরির প্রোঅ্যাক্টিভ বিজ্ঞাপন অনেকেই দেখেছেন। প্রোঅ্যাক্টিভের এই দীর্ঘদিনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর বলেছিলেন যে, এই ব্র্যান্ডের স্কিনকেয়ার পণ্যগুলো সত্যিই তাঁর ব্রণ দূর করতে সাহায্য করেছে। পেরি ২০১৮ সালে ‘রিফাইনারি২৯’ কে বলেছিলেন, ‘প্রোঅ্যাক্টিভ থেকে আমাকে এটা বলার জন্য টাকা দেয় না! এটি আসলে আমার ব্রণের সমস্যা সমাধান করেছে।’

পেরি আরও জানান, ২০ বছর তাঁর ত্বক সত্যিই অনেক খারাপ ছিল। মানসিক চাপের কারণে প্রচুর ব্রণ উঠত তাঁর মুখে। লেজার ট্রিটমেন্ট, বিভিন্ন মলম ও ফেসিয়াল করার পরও ব্রণ থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছিলেন না তিনি। এরপর পরিচিত একজন তাঁকে প্রোঅ্যাক্টিভ ক্লিনজার ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তারপর? নিয়মিত ব্যবহারে তিনি শেষমেশ ব্রণ থেকে মুক্তি পান।
ক্লিনজিং অয়েল ব্যবহার করেন
দর্শকেরা কী ভাবেন? পেরি বুঝি ঘর্মাক্ত চকচকে শরীর নিয়ে স্টেজে পরিবেশনা করেন, তাইতো? কিন্তু না। গায়িকা ‘এলিট ডেইলি’ নামে একটি অনলাইন নিউজ প্ল্যাটফর্মকে বলেছিলেন, তিনি আসলে খুব বেশি ঘামেন না। তা ছাড়া তাঁর ত্বক মিশ্র প্রকৃতির, ফলে খুব বেশি তেল চিটচিটেও হয় না। বরং মেকআপ ঠিক রাখতে প্রচুর পাউডার মুখে ব্যবহার করেন তিনি। তবে তাঁর এই চকচকে ত্বকের রহস্য অন্য। প্রতি রাতে তিনি ক্লিনজিং অয়েল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ঘুমাতে যান।
আমি কখনো আমার মেকআপ নিয়ে ঘুমাই না। কেটি পেরি, মার্কিন পপ তারকা, এল ম্যাগাজিন এর সাক্ষাৎকারে
একটি বিশেষ ক্লিনজিং অয়েলের নাম উচ্চারণ করে কেটি জানিয়েছিলেন, ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার করার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি সেই ক্লিনজিং অয়েল ব্যবহার করেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমি আগে আমার মুখে তেল লাগাতে ভয় পেতাম। কিন্তু এটি সত্যিই আমার ত্বকের গভীর থেকে ময়লা টেনে বের করে আনে।’
প্লাস্টিক সার্জারি নাকি রূপ বর্ধন; কোনটায় বিশ্বাস করেন পেরি?
২০১৮ সালে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যে, পেরি মুখে প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন। তিনি তা স্বীকার করেননি। ‘রিফাইনারি২৯’-কে পেরি বলেন, ‘আমি কোনো সার্জারি করিনি। কেবল লেজার করেছি এবং চোখের নিচে ফিলার ইনজেকশন দিয়েছি।’ তিনি স্পষ্ট বলে দেন, এর বাইরে তাঁর সবই প্রাকৃতিক। পেরি স্পষ্ট করে আরও বলে দিয়েছেন যে তিনি কসমেটিক চিকিৎসার বিরুদ্ধে নন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমরা স্বেচ্ছায় শারীরিক কোনো পরিবর্তন সম্পর্কে আগেকার সেই নেতিবাচক ধারণা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। কেউ যদি নাকের সৌন্দর্য বাড়াতে সার্জারি করেন এবং ভালোবোধ করেন, তাহলে ক্ষতি কী!’
তিনি জানেন, ভালো ত্বক ভেতর থেকে আসে
কেবল ওপর থেকেই ত্বকের যত্ন নেন, তা কিন্তু নয়। কেটি পেরি নিয়মিত যোগব্যায়াম করেন। তিনি ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে নিজের সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দেন। এই পপস্টার ‘রিফাইনারি২৯’-কে জানান, খাবারের প্রতি তাঁর আকর্ষণ অনেক। কিন্তু সুষম খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করে এবং আপেল সিডার ভিনেগার মেশানো পানিতে চুমুক দিয়ে সেগুলোকে কীভাবে পরাস্ত করতে হয়, তা শিখেছেন তিনি।
কানাডার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে অনেকের মনে। কিন্তু চল্লিশ বছরেও কেটি পরির উজ্জ্বল ত্বকের যত্ন বিষয়ে কারও মনে প্রশ্ন নেই। সুষম খাদ্যাভ্যাস তৈরি করে ও সঠিক প্রসাধনী বেছে নিয়ে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন কেটি পেরির মতোই উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী।
সূত্র: প্রিভেনশন ও অন্যান্য