শিরোনাম

গাজায় আরও ৭৪ জনের প্রাণহানি, দৈনিক গড়ে ২৮ শিশুর মৃত্যু

গাজায় আরও ৭৪ জনের প্রাণহানি, দৈনিক গড়ে ২৮ শিশুর মৃত্যু

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গতকাল সোমবার অন্তত ৭৪ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ৩৬ জনের। ভোররাতে এ হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

নাসের হাসপাতালের সূত্রের বরাতে আল-জাজিরা জানায়, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি তাঁবু লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী বোমা হামলা চালালে অন্তত পাঁচজন নিহত হন। অন্যদিকে মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরের উত্তরে ইসরায়েলি কামান হামলায় আরও দুজন নিহত হন বলে জানিয়েছে আল-আওয়দা হাসপাতাল।

এছাড়া গাজা সিটির উত্তর-পশ্চিমে একটি অ্যাপার্টমেন্টে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত হন এবং কয়েকজন আহত হন বলে জানিয়েছে আল-শিফা হাসপাতালের কর্মীরা।

এদিকে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বোমা হামলা, ত্রাণের অভাব, অনাহার ও অপুষ্টির কারণে গাজায় প্রতিদিন গড়ে ২৮ শিশু মারা যাচ্ছে।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল প্রতিদিন মাত্র ৮৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে, যা প্রতিদিনের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় ৬০০ ট্রাকের মাত্র ১৪ শতাংশ।

জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘গাজায় যে পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করছে তা অনাহারে থাকা জনগণের জন্য পর্যাপ্ত নয় এবং আমাদের ত্রাণবহরগুলো এখনো নানা বাধার মুখে পড়ছে।’

গাজায় মানবিক সহায়তার সমন্বয় তদারককারী ইসরায়েলি সামরিক সংস্থা সিওজিএটি জানিয়েছে, তারা ধাপে ধাপে এবং নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে গাজায় পণ্য প্রবেশের অনুমতি দেবে। এতে করে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা কমিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এর উদ্দেশ্য হলো গাজা উপত্যকায় সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করা এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সহায়তা সংগ্রহের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, গাজায় আসা সব পণ্যই তল্লাশির আওতায় পড়বে। তবে অনুমোদিত ব্যবসায়ীরা কারা, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

এদিকে হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা ওসামা হামদান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল যে ‘কৌশলগত অনাহার’-এর মাধ্যমে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’।

গাজা সিটিতে কর্মরত চিকিৎসাসেবা সংস্থা ডক্টরস উইদআউট বর্ডার্স-এর প্রকল্প সমন্বয়কারী ক্যারোলিন উইলেমন জানিয়েছেন, অপুষ্টি ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে আহত ফিলিস্তিনিরা সঠিকভাবে সেরে উঠতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘তাঁরা যেমনভাবে সেরে উঠার কথা, তেমনভাবে হচ্ছে না। সবকিছুর ওপর তারা শুধু আহতই নন, তাঁদের পর্যাপ্ত খাবারেরও অভাব রয়েছে। তাঁদের অনেকেই তাঁবুতে বাস করছেন, যেখানে পানির কোনো ব্যবস্থা নেই।’

উইলেমন আরও বলেন, পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণরূপে বিভীষিকাময় ও বিভ্রান্তিকর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button