শিরোনাম

খরার পর স্বস্তির বৃষ্টি, আমন চাষিদের মুখে হাসি

খরার পর স্বস্তির বৃষ্টি, আমন চাষিদের মুখে হাসি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় টানা খরায় দিশেহারা ছিলেন কৃষকেরা। ভরা বর্ষায়ও তারা ছিলেন আকাশের দিকে তাকিয়ে। আমন ধানের চারা প্রস্তুত থাকলেও ভারী বর্ষণের অভাবে তা রোপণ সম্ভব হচ্ছিল না। তবে কয়েক সপ্তাহের খরার পর সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে কৃষি খাতে। জমিতে এখন জমেছে পানি, ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।

রোপা আমন চাষের উপযুক্ত সময় আষাঢ়ের মাঝামাঝি থেকে শ্রাবণ পর্যন্ত। কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে রোপণ কার্যক্রমে বিলম্ব ঘটে। এবার শ্রাবণের মাঝামাঝি এসে টানা বৃষ্টিতে জমিতে সেচ না দিয়েই রোপণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে খরচও কমে যাবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।

দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ২৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে জুলাই মাসে হয়েছে ২৪৭ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম। তবে আগস্টে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি।

গত চার বছরে দিনাজপুরে মোট বৃষ্টিপাত ছিল যথাক্রমে—২০২১ সালে ১,৭৫৪ মিলিমিটার, ২০২২ সালে ১,৭৩০ মিলিমিটার, ২০২৩ সালে ১,৯৫৯ মিলিমিটার এবং ২০২৪ সালে ১,৬৭১ মিলিমিটার।

মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কেউ জমি তৈরি করছেন, কেউবা আগাছা পরিষ্কার করে সার দিচ্ছেন। অনেকেই রোপণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় তাঁরা সেচ ছাড়া আমন ধান চাষের স্বপ্ন দেখছেন।

আমন রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কিষাণী। ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দাদপুর মালিপাড়া থেকে সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আমন রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কিষাণী। ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দাদপুর মালিপাড়া থেকে সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শিবনগর ইউনিয়নের কৃষক রাশেদুজ্জামান বাপ্পি বলেন, ‘১ একর জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের আমন ধান রোপণ করব। বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তিত ছিলাম, এখন চারা রোপণ শুরু করেছি।’

একই গ্রামের কৃষক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা মূলত বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। জমিতে এখন প্রয়োজনীয় পানি জমেছে, তাই রোপণের উপযোগী হয়ে উঠেছে।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাহানুর রহমান বলেন, ‘শুরুর দিকে বৃষ্টির ঘাটতির কারণে অনেকে রোপণ করতে পারেননি। কিন্তু এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমরা আশাবাদী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রোপণ শেষ হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button