শিরোনাম
মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় নিহত মাহতাবের সমাধিতে বিমানবাহিনীর শ্রদ্ধাধামইরহাট থেকে চুরি হওয়া ট্রাক ঢাকায় উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২হামাস ত্রাণ চুরি করেনি, ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তাদের স্বীকারোক্তিশেফের টুপি লম্বা কেন‘বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের ভালো উইকেটে খেলে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত’যুক্তরাষ্ট্রে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে গাঁজা সেবন বেড়েছে: গবেষণানরসিংদীতে ডোবায় ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুএক ইঞ্চি মাটিও ছাড়বে না থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া, কিন্তু যুদ্ধ চালানোর সক্ষমতা কতটুকুঅনলাইনে পর্নো দেখতে সেলফি দেওয়া বাধ্যতামূলক করল যুক্তরাজ্যগোপালগঞ্জে কারাগার থেকে হাতকড়া-পোশাক চুরি, কারারক্ষী গ্রেপ্তার

কারফিউ আতঙ্ক গুলির মধ্যেও সাহস হারাইনি

কারফিউ আতঙ্ক গুলির মধ্যেও সাহস হারাইনি

২০২৪ সালের জুলাইয়ের শুরুতে কোটা আন্দোলন আমাদের কাছে ছিল শুধুই টিভি স্ক্রিন আর সোশ্যাল মিডিয়ার ফিডের দৃশ্য। কিন্তু ১০ জুলাইয়ের পর রামপুরা-বাড্ডা এলাকায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিবেশ; ছোট ছোট অবরোধ, স্লোগান আর পোস্টারে শহর যেন বদলে যেতে লাগল। ১৪ জুলাইয়ের পর তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের বেফাঁস মন্তব্য আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের ওপর ছাত্রলীগের নির্মম হামলা আমাদের আর চুপ করে বসে থাকতে দেয়নি।

১৬ জুলাই আমরা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামি এবং শহরের চিত্র পাল্টে যায়। সেদিন বুঝতে পারি, এটা শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নয়, আমাদেরও লড়াই! ১৭ জুলাই আবার রাস্তায়। পুলিশের বাধা এল, তবে সেদিন তারা তেমন আক্রমণ চালায়নি। ১৮ জুলাই সকালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে পুলিশের হামলার খবর মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ল। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা বের হতেই কাঁদানে গ্যাস আর গুলির আওয়াজ। গুলির শব্দে শহর কেঁপে ওঠে। আমাদের চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হলেন আমাদের বিভাগের ইম্পিরিয়ালের এক ছোট ভাই। সেই গোলাগুলির মাঝেও মানবতার অপূর্ব দৃশ্য দেখলাম।

জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন ফারহান ইবতেশাম জয়।
জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন ফারহান ইবতেশাম জয়।

কেউ আহতদের টেনে নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছে, কেউ স্যালাইন ঝুলিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে। মানুষ ফল, পানি আর কাপড় নিয়ে গেটের বাইরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য দরজা খুলে দেয়। ধোঁয়ায় ঢেকে গেল শহর; মাথার ওপর সামরিক হেলিকপ্টারের ভ্রুকুটি শব্দ। একপর্যায়ে এক পুলিশ কনস্টেবলকে জনতা ধরে ফেলে। আমরা কয়েকজন তাঁকে রক্ষা করি। রাতে বিজিবি এল, পুলিশের রেইডের খবর এল, মেস ফাঁকা হয়ে গেল। আমি আশ্রয় নিলাম বন্ধুর বাসায়। এরপর দিনগুলো কাটল কারফিউ, আতঙ্ক, গুলির মধ্যে; তবুও সাহস হারাইনি।

আমরা বন্ধুরা, রাইয়ান, মেহেদী, পিয়াল—এই সংগ্রামের সাক্ষী। দূরে থেকেও খাইরুল শিশির প্রতিদিন আমার খোঁজ নিয়েছে। আমরা শুধু কোটা নয়, দাবি তুলেছিলাম মানবিকতা, শিক্ষা, রাষ্ট্রের জবাবদিহির। কিন্তু আফসোস, আজও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবুও আমি স্বপ্ন দেখি—একটা নতুন বাংলাদেশের, যেখানে থাকবে ন্যায়, সাম্য আর মানুষের অধিকার। জানি না সেই দিন কবে আসবে। তবুও বিশ্বাস রাখি; বিশ্বাসে মেলে বস্তু, তর্কে বহুদূর।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button