বাংলাদেশকে গণতন্ত্র শেখাতে চায় ভারত!


ক্রাইম জোন ২৪।। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের অতি-হস্তক্ষেপ? জয়শঙ্করের নির্বাচনী মন্তব্যে প্রশ্ন উঠছে
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে—বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে ভারতের অবস্থান কি মাত্রাতিরিক্ত হয়ে পড়ছে?
বুধবার (৯ এপ্রিল) নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা আশা করি বাংলাদেশ শিগগিরই নির্বাচন আয়োজন করবে।” সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, “বাংলাদেশের মঙ্গল ভারতের ডিএনএ-তে রয়েছে” এবং “ভারতের মতো আর কোনো দেশ বাংলাদেশের ভালো চায় না।”
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের মন্তব্য সরাসরি একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়। এমন সময়ে যখন বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক চলছে এবং রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত, তখন ভারতের এই মন্তব্য অনেকের কাছেই অনভিপ্রেত ও অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হচ্ছে।
বিশেষ করে জয়শঙ্করের “বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে যে বার্তা বেরিয়ে আসছে তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ রয়েছে” মন্তব্যটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে—ভারত কীভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জনমতের ব্যাখ্যাকারী হয়ে উঠলো?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে ভারত শুধু কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভঙ্গ করেনি, বরং বাংলাদেশের স্বনির্ভর গণতন্ত্র ও অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
একাধিক পর্যবেক্ষকের মতে, বাংলাদেশের নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের প্রত্যক্ষ মন্তব্য দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে খাটো করে দেখার সামিল এবং এটি একটি বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীর কাছ থেকে কাম্য নয়।
জয়শঙ্করের মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে যখন থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ হয়েছে। তাতেও এক ধরণের রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
এই সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক ও বিশ্লেষকদের একাংশ ভারতের এই ধরনের ভূমিকার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক কাঠামো সম্পূর্ণভাবে দেশের জনগণের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত—এমনটাই বলছেন তারা।