শিরোনাম

নৌ সদস্যের তিন বিয়ে, বাড়িতে অনশনে এক স্ত্রী

নৌ সদস্যের তিন বিয়ে, বাড়িতে অনশনে এক স্ত্রী

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে রানা মিয়া (২৫) নামে এক নৌ সদস্যের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক তরুণী। শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেল ৫টা থেকে উপজেলার কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম নয়নপুর গ্রামে ওই নৌ সদস্যের বাড়িতে তিনি অনশন শুরু করেন।

ওই তরুণীর বাড়ি বগুড়া সদরে। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি বিউটি পারলারে কাজ করেন। আর অভিযুক্ত রানা মিয়া (২৫) উপজেলার পশ্চিম নয়নপুর গ্রামের জয়নাল মিয়ার ছেলে। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নাবিক পদে কর্মরত।

স্থানীয়রা জানান, মোটা অঙ্কের আর্থিক (সাত লাখ টাকা) সুবিধা নিয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে (পশ্চিম নয়নপুর) এক তরুণীকে প্রথম বিয়ে করেন রানা। এরই মধ্যে ওই পারলার কর্মীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়-সম্পর্ক হয় রানার। তাঁকেও চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন করে সাড়ে তিন লাখ টাকা মোহরানা নির্ধারণে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। এরপর নীলফামারীর বাসিন্দা আরেক তরুণীকে তৃতীয় বিয়ে করে ঘরসংসার করছেন রানা। সেই স্ত্রী বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা।

এদিকে ২০২৪ সালে তৃতীয় স্ত্রীর বাবার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে প্রথম স্ত্রীর দেনমোহরসহ তাঁর বাবার কাছ থেকে নেওয়া টাকা পরিশোধ করে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান রানা। সাবেক সেই স্ত্রীর বাবা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অনশন করা তরুণী বলেন, ফেসবুকে রানার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ২ মে তাঁকে বিয়ে করেন রানা। প্রথম দিকে তাঁরা বগুড়ায় বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন। পরে দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন রানা। এর মধ্যে রানার একাধিক বিয়ের কথা জানতে পারেন তিনি।

ওই তরুণী আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁর কোনো খোঁজখবর নেওয়া থেকে দূরে থাকসহ ভরণপোষণের টাকাও দিচ্ছেন না রানা। সে কারণে বগুড়া আদালতে একটি মামলাও করেছেন তিনি।

এদিকে, আজ বিকেলে স্ত্রীর দাবি নিয়ে রানার বাড়িতে গেলে তাঁর (রানা) তৃতীয় স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁকে মারধর করে ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চান ওই তরুণী।

পরে পলাশবাড়ী থানার উপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। তারা তরুণীর সার্বিক বর্ণনা শোনে ও কাগজপত্র যাচাইসহ রানার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে তরুণীকে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুলিশ।

এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী থানার এসআই মাহফুজ জানান, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। অভিযুক্তরা ঘরে তালা দিয়ে পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। সাহায্যপ্রার্থীকে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পরে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয়রা বিষয়টি আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলে রাত পৌনে ৯টার দিকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওই তরুণী ও তাঁর সঙ্গে আসা স্বজনেরা।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button