আগামী সপ্তাহেই হতে পারে ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠক


রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকে বসতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী সপ্তাহেই এই বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরালো করার অংশ হিসেবেই এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, রাশিয়ার পক্ষ থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে এবং ট্রাম্পও তাতে রাজি হয়েছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘খুব শিগগিরই এমন একটি বৈঠক হওয়ার ভালো সম্ভাবনা আছে।’
বৈঠকটি হলে এটি হবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে সরাসরি প্রথম সাক্ষাৎ এবং ২০২১ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টদের মধ্যে প্রথম বৈঠক। সর্বশেষ জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন জেনেভায় মুখোমুখি হয়েছিলেন।
এর আগে, গতকাল বুধবার মস্কোয় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ট্রাম্প বলেন, ওই বৈঠকে ‘বড় অগ্রগতি’ হয়েছে। যদিও তিনি এটিকে ‘ব্রেকথ্রু’ বলতে রাজি হননি। ক্রেমলিনের এক কর্মকর্তাও বৈঠকটিকে ‘গঠনমূলক’ ও ‘ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেছেন।
একই দিনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে এক ফোনালাপে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও আলোচনায় যুক্ত করতে চান। এমনকি একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের কথাও বলেছেন তিনি।
তবে এখন পর্যন্ত পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে কোনো সাক্ষাতের সম্ভাবনা দেখা যায়নি। ২০১৯ সালের পর তাঁরা আর মুখোমুখি হননি এবং দুজনের মধ্যে পারস্পরিক তীব্র বিরোধ স্পষ্ট।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনাও করছে ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, শুক্রবার থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখা দেশগুলোর ওপর সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে। এর আওতায় চীনকেও আনা হতে পারে।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা এটা ভারতের ওপর করেছি। আরও কয়েকটি দেশের ওপর করতে যাচ্ছি। এর একটি হতে পারে চীন।’
অপর দিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক চাপের কারণে রাশিয়া এখন যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আগের চেয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘রাশিয়া যেন আমাদের বা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো কৌশলী প্রতারণা না করে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, যুদ্ধের দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থার মধ্যে ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক হলে তা হতে পারে এক নতুন কূটনৈতিক মোড়। তবে শেষপর্যন্ত আলোচনা কতদূর গড়ায়, তা নির্ভর করছে আসন্ন বৈঠকগুলোর বাস্তব অগ্রগতির ওপর।