পশ্চিম তীরকে জুডিয়া–সামারিয়া নামে ডাকতে চান মার্কিন স্পিকার


পশ্চিম তীরকে ‘জুডিয়া ও সামারিয়া’ নামে ডাকতে চান যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার মাইক জনসন। সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে পশ্চিম তীরের শিলোহ শহরে এক ঐতিহাসিক বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এটি ছিল এই অঞ্চলে কোনো মার্কিন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার প্রথম সরাসরি সফর।
বৈঠকের আগে জনসন আরিয়েল শহর সফর করেন, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল ও কংগ্রেস সদস্যরা তার সঙ্গে ছিলেন। জনসন সেখানে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল পর্যায়ে “ওয়েস্ট ব্যাংক” শব্দটির ব্যবহার বন্ধ করতে তিনি কাজ করবেন। এর পরিবর্তে তিনি “জুডিয়া ও সামারিয়া” শব্দযুগল প্রচলনের পক্ষে অবস্থান নেন।
এই সফরের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ইসরায়েলের ডানপন্থী বসতিপন্থী সংগঠন ইয়েশা কাউন্সিল। সংগঠনটি পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের অন্তর্ভুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালিয়ে আসছে। কয়েক সপ্তাহ আগে তারা ‘জুডিয়া, সামারিয়া ও জর্দান উপত্যকা’কে ইসরায়েলের অবিচ্ছেদ্য অংশ দাবি করে একটি ঘোষণাপত্র পাস করে।
ইয়েশা কাউন্সিলের মহাপরিচালক ওমের রাহামিম বলেন, “জনসনের সফর প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবেই দেখছে। এখন দায়িত্ব সরকারের, যাতে তারা এখানকার লাখো ইসরায়েলি নাগরিককে সামরিক শাসনের বাইরে এনে পূর্ণ নাগরিক অধিকার দেয়।”
জনসনের সফরে তার সঙ্গে ছিলেন সাবেক গভর্নর ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মাইক হাকাবি এবং তার মেয়ে, আরকানসাসের গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স। সারা ছিলেন প্রথম মার্কিন রাজ্য নেতা যিনি ‘জুডিয়া ও সামারিয়া’ নামকে সমর্থন দিয়ে প্রস্তাব পাস করান। সফরের সময় হাকাবি বলেন, “এই জমি ঈশ্বরের দেওয়া, আর আমেরিকার প্রকৃত বন্ধু একটাই—ইসরায়েল।”
আরিয়েল শহরের মেয়র ইয়ায়ার চেতবুন বলেন, এই শহরকে এই ঐতিহাসিক বৈঠকের জন্য বেছে নেওয়া ছিল একটি কূটনৈতিক দায়িত্ব। তিনি স্পিকার জনসন ও মার্কিন প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানান।
ইসরায়েলি নেতারা মনে করছেন, জনসনের সফর এবং “জুডিয়া ও সামারিয়া” শব্দ ব্যবহার আন্তর্জাতিকভাবে পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের অন্তর্ভুক্তির পথে এক নতুন বার্তা বহন করে। তবে এই অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়তে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, পশ্চিম তীরকে অধিকৃত এলাকা হিসেবে দেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ‘জুডিয়া ও সামারিয়া’ নাম ব্যবহারকে অনেকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন।