স্ত্রীকে পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা, পলাতক স্বামী


গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর পালিয়েছে মাদকাসক্ত স্বামী। চার মাস বয়সী শিশুর কান্নার শব্দে প্রতিবেশীরা গিয়ে বাড়িতে স্ত্রীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। ঘটনার পর স্বামী পলাতক রয়েছেন। তবে জড়িত সন্দেহে পুলিশ শাশুড়িকে আটক করেছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণীর নাম সুইটি আক্তার (২০)। তিনি ময়মনসিংহের পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামের মৃত আফসারুল ইসলামের মেয়ে। তাঁর স্বামী মো. নূরুল ইসলাম (৩৫) গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। দেড় বছর আগে সুইটির বিয়ে হয় নূরুল ইসলামের সঙ্গে। তাঁদের ঘরে চার মাস বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
নিহতের মামা জসিম শেখ বলেন, ‘আমার ভাগনিকে ছোটবেলায় মা হারানোর পর এক বোনের কাছে মানুষ করেছি। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় গোপনে তার খালু নাজমুল মাদক কারবারি নূরুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকেই মাদকের টাকার জন্য ও নানা বিষয় নিয়ে সুইটিকে নির্যাতন করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার রাত ১০টার দিকে নাজমুল ফোন করে জানান, সুইটি মারা গেছে। খবর পেয়ে আমরা গিয়ে দেখি তার মরদেহ পড়ে আছে, শরীরে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন। দুই পা হাঁটুর নিচ থেকে থেঁতলানো, মাথা ও শরীরজুড়ে একাধিক আঘাত। পাশেই তার শিশুটি কাঁদছিল, শরীরেও রক্ত লেগে ছিল।’
নিহতের খালা আকলিমা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে সুইটির জীবন ছিল অত্যাচারে ভরা। প্রতিদিন মারধর করত নূরুল ইসলাম। এ পর্যন্ত নির্যাতন চালিয়ে শেষমেশ তাকে মেরেই ফেলল। চার মাসের শিশুটি এখন মায়ের দুধের জন্য কাঁদছে। আমরা বুঝতে পারছি না তাকে কীভাবে বড় করব।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পিটিয়ে হত্যার পর শ্বাসরোধ করা হয়েছে। ঘাতক স্বামী পলাতক, তাঁকে ধরতে অভিযান চলছে। শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’