শিরোনাম
এক বছরেও সন্ধান মেলেনি শাহে আলমের, অসহায় পরিবারনিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিতে নামবে জিম্বাবুয়ে, খেলা দেখবেন কোথায়উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা, সচিবালয়ে কঠোর নিরাপত্তাবাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলায় কলকাতায় স্টেডিয়ামে প্রতিবাদী ব্যানার টাঙাল ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকেরাযেসব আমলে সংসারে শান্তি আসেট্রাম্পের চাপে যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে অ্যাপলরামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ছাত্রকে গুলি, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলগাজায় তীব্র রক্তসংকট, বাড়ছে ইসরায়েলি হামলা ও অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যামাদারীপুরে ভিমরুলের কামড়ে প্রাণ গেল শিশুরলৌহজংয়ে বিদেশি পিস্তলসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব

স্বপন-কুদ্দুসের দ্বন্দ্বে নির্বাচনের আগে দলে অস্থিরতা

স্বপন-কুদ্দুসের দ্বন্দ্বে নির্বাচনের আগে দলে অস্থিরতা

বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় দুই প্রভাবশালী নেতা—বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপনের মধ্যকার বাগ্‌যুদ্ধ ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা।

দুই নেতাই গৌরনদী-আগৈলঝাড়া (বরিশাল-১) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। সাম্প্রতিক একাধিক সমাবেশে তাঁরা একে অপরকে ইঙ্গিত করে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তাতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

গত মঙ্গলবার গৌরনদীতে এক জনসভায় জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘দলের মধ্যেই যদি মাদক ব্যবসায়ী, গডফাদার থাকে, তাহলে কি আমরা তা মেনে নেব? গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায় বিএনপির কোনো গডফাদার চলবে না। সময় হলে ডাক দেব।’

এর পাল্টা জবাবে কুদ্দুসুর রহমান এক সমাবেশে বলেন, ‘আপনার পাশে জাতীয় পার্টি, পেছনে আওয়ামী লীগ। ভোটারবিহীন নির্বাচনের চেয়ারম্যান পিকলু গুহকে আপনি শেল্টার দেন। আপনার লজ্জা করে না? মৌচাকে ঢিল মারবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের সময় যারা বিএনপিকে বিভক্ত করতে চেয়েছিল, তারা আজ আবার সরব হয়েছে। তারা অভিভাবক হতে পারে না।’

২০০১ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন জহির উদ্দিন স্বপন। তবে ২০০৮ সালে তিনি ধানের শীষের বিরুদ্ধে গিয়ে হরিণ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন, যেখানে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল মাত্র ১৬০। দীর্ঘ সময় তিনি বিএনপি থেকে দূরে ছিলেন এবং বাম রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানা যায়।

অপরদিকে, কুদ্দুসুর রহমান দীর্ঘদিন দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও একাধিকবার মনোনয়ন চেয়ে পাননি। তাঁর বিরুদ্ধে ‘মেজাজি’ চরিত্রের অভিযোগ রয়েছে।

গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বদিউজ্জামান মিন্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গৌরনদীতে কোনো গডফাদার নেই। স্বপন ভাই হয়তো আওয়ামী লীগ আমলে যেসব কুখ্যাত ব্যক্তি ছিল, তাঁদের প্রসঙ্গ টেনেছেন। আর কুদ্দুস ভাই হয়তো মনোকষ্ট থেকে এসব বলছেন। তবে মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে এসব বিরোধ কেটে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার কয়েকজন বিএনপি নেতা বলেন, স্বপন-কুদ্দুসের দ্বন্দ্বে দল নির্বাচনীভাবে ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাঁদের ভাষায়, ‘অনেকেই যাঁরা দীর্ঘদিন এলাকায় ছিলেন না, তাঁরা এখন বিভিন্ন দলের লোকজন দিয়ে সংগঠন ভারী করছেন, যা দলের জন্য অশনিসংকেত।’

আজকের পত্রিকাকে দেওয়া বক্তব্যে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেন নিয়ে কথা বলে কুদ্দুস আসলে দলের চেয়ারপারসনকেই বিতর্কে ফেলেছেন। আমি গডফাদারদের কথা বলেছি, যাঁরা একসময় হাসানাত বা হারিছ ছিলেন, তাঁদের বোঝাতে চেয়েছি। এখন বিএনপিতে যদি কেউ গডফাদার হয়ে ওঠেন, তাঁদের গায়ে লাগবেই।’

অন্যদিকে, আকন কুদ্দুস বলেন, ‘স্বপনই মাদক ব্যবসায়ী তৈরি করেছেন, তিনিই গডফাদার বানিয়েছেন। ওনার লোক পৌর বিএনপিতে চাঁদাবাজির অভিযোগে বহিষ্কৃত। স্বপন যদি ওয়ান ইলেভেনে জড়িত না থাকেন, তাহলে এত বছর দলের বাইরে ছিলেন কেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বপনের লোকজন লাখ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে। তিনি রাজনৈতিকভাবে চতুর্দিকে ঘেরা একজন মানুষ, পাগলের প্রলাপই বকবেন। ধানের শীষের সঙ্গে বেইমানি করলে কেউ দলে টিকবে না।’

স্থানীয় রাজনীতিবিদদের মতে, গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দ্রুত নিরসন না হলে নির্বাচনে তা দলের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button