ইউটিউবে এখন মিস্টার বিস্টের ধারেকাছে কেউ নেই, পেলেন বিশেষ বাটন


মিস্টার বিস্ট নামে পরিচিত ইউটিবের সুপারস্টার জিমি ডোনাল্ডসন নতুন ইতিহাস গড়লেন। তাঁর প্রধান চ্যানেল ৪০০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি সাবস্ক্রাইবার পার করায় বিশ্বের প্রথম একক ক্রিয়েটরের স্বীকৃতি পেলেন তিনি। এই উপলক্ষে ইউটিউব তাঁকে একটি বিশেষ ধরনের প্লে বাটন ট্রফি প্রদান করে, যা এই অবিস্মরণীয় কৃতিত্বের স্মারক।
ফোর্বসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের ১ জুন এই অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেন মিস্টার বিস্ট। এই মাইলফলক তাঁর ডিজিটাল ক্রিয়েটর হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রভাবকে আরও দৃঢ় করলো।
এদিকে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতীয় গানের চ্যানেল টিসিরিজ। এই চ্যানেলের সাবস্কাইবারের সংখ্যা ৩০০ মিলিয়নবা ৩০ কোটি। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে শিশুতোষ চ্যানেল ‘কোকোমেলোন’। এই চ্যানেলের সাবস্কাইবার সংখ্যা ১৯৬ মিলিয়ন বা ১৯ কোটি ৬ লাখ।
ইউটিউবে ৪০ কোটি সাবস্কাইবারের মাইলফলক অর্জনের জন্য জিমি ডোনাল্ডসনের হাতে প্লে বাটনটি তুলে দেন ইউটিউবের সিইও নীল মোহান। এই পুরস্কারটি প্রচলিত স্বর্ণ বা ডায়মন্ড প্লে বাটনের মতো নয়। এতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ধাতব ফ্রেম, যার কেন্দ্রবিন্দুতে বসানো হয়েছে এক বিরল নীল রত্ন।
এই সাফল্যের খবরে মিস্টার বিস্ট একটি আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেন। সেই পোস্টে তিনি বলেন, এক দশক আগে সবাই বলত আমি কনটেন্ট নিয়ে অতিমাত্রায় আসক্ত আর কখনো সফল হতে পারব না। তবে আমি কন্টেন্ট বানাতে এত ভালোবাসতাম যে মাকে বলেছিলাম গরিব হয়ে গেলেও অন্য কিছু করব না। ইউটিউব এবং তোমাদের জন্য আজ আমার প্রতিটি দিন অর্থপূর্ণ।’
ভক্তরা তাঁর সাফল্যকে সাধুবাদ জানালেন, তবুও ট্রফির ডিজাইন নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন এটি আগের পুরস্কারগুলোর পুনরাবৃত্তি মাত্র। এক রেডিট ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, এটা যেন কেবল নিয়মরক্ষা করার জন্যই দেওয়া হয়েছে।’
অন্য একজন লিখেছেন, ‘এটা তো মাত্র ১০ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবারের বাটনের একটি নীল রঙের সংস্করণ।’
অন্যদিকে কিছু ভক্ত ইউটিউবকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, নীল কেন্দ্রবিন্দুটি সম্ভবত মূল্যবান পাথর যেমন ল্যাপিস লাজুলি বা আজুরাইট দিয়ে তৈরি। তবে মোটামুটি মেজাজ হতাশাজনক ছিল এবং অনেকেই এর ডিজাইনকে ‘এআই দিয়ে’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
মিস্টার বিস্ট শুধুই একজন ইউটিউবার নন; তিনি একজন বৈশ্বিক উদ্যোক্তা। চলতি বছরে সেলিব্রিটি নেট ওর্থ তাঁর সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ১ বিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেছে। বিশ্বের অষ্টম এবং ৩০ বছরের নিচে একমাত্র বিলিয়নিয়ার মিস্টার বিস্ট। সম্পদের উত্তরাধিকার ছাড়াই এই সফলতা অর্জন করেছেন তিনি।
তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ‘বিস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ’ ২০২৪ সালে ৪৭৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে এবং চলতি বছরে আয়ের পরিমাণ দ্বিগুণ হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে। মূল ইউটিউব কনটেন্টের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করেন মিস্টার বিস্ট। যেমন: ফুড চেইন, গেমিং চ্যানেল, মার্চেন্ডাইজ। পাশাপাশি উদ্ভাবনী স্টার্টআপ এবং দাতব্য প্রকল্পে বিনিয়োগ করছেন, যা তাঁকে প্রজন্মের অন্যতম প্রভাবশালী ডিজিটাল উদ্যোক্তা করে তুলেছে।