ফ্যাসিবাদ গিয়েছে, গণতন্ত্র এখনো আসেনি: নজরুল ইসলাম খান


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘২০২৪ সালের ৩ আগস্টে আমাদের সকলের মূল দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের পতন ও গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। দেশের সাধারণ মানুষের ঐক্য ও সমর্থনে আমরা ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করতে পেরেছি, কিন্তু এখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি হলো, জনগণের ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, যা তারা বহুদিন ধরে প্রয়োগ করতে পারেনি।’
আজ রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘জুলাই সমাবেশ’-এ এসব কথা বলেন তিনি।
সংস্কারের প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের জন্য ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছি, যা যথেষ্ট সুস্পষ্ট ও কার্যকর। আমাদের আগে কেউ এত সুসংগঠিত সংস্কার প্রস্তাব দেয়নি। সংস্কার কমিশনের বাইরেও বিভিন্ন পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাব আসছে, যেগুলোর বেশির ভাগই প্রকৃতপক্ষে সংস্কার বিলম্বের কৌশল। কেউ সময় নিচ্ছেন সংগঠিত হতে, কেউ আবার বিভিন্ন জোট গঠনের চেষ্টা করছেন, তাই তারাও সময় চাইছেন। কিন্তু এ জন্য কি জনগণকে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে? নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা কি পিছিয়ে যাবে?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা প্রস্তুত করছে, সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশন তাদের কাজ প্রায় শেষ করেছে। তাহলে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘গুম, খুন ও হত্যার শিকার যেসব মানুষ, তাদের বিচারের দাবি আমরা আগেই তুলেছি। এ জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছি। আমরা চাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার হোক। কিন্তু কেউ কেউ নানা অজুহাতে বিচার বিলম্বিত করতে চাইছে। এরা রাজনৈতিক মতলববাজ। আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ ও অপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে আমরা যতটা কঠোর, আর কেউ ততটা নয়।’
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘গত ১৫ বছর আমরা গুম-খুন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এক দানবীয় সরকারের মোকাবিলা করেছি। ২৪ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে এসেছিল ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করতে, যেখানে নেতৃত্ব ছিল ছাত্রদের হাতে। আজ আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়ে নানা কথা শোনা গেলেও, নেতৃত্ব কারও চাপে আসে না। এটা অর্জিত হয় কর্মফলের মাধ্যমে। ইউনূস সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা পালিত হলে জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবে।’
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।