একসঙ্গে ২০ জনের সঙ্গে প্রেম, উপহারের আইফোন বেচে ফ্ল্যাটের মালিক তরুণী


চীনে সম্প্রতি এক পুরুষ নারীর ছদ্মবেশে শত শত পুরুষকে ফাঁদে ফেলে উপহার আদায়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর, প্রায় এক দশক আগের আরেক প্রতারণার ঘটনা নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই পুরোনো ঘটনার ভিডিও এরই মধ্যে এক কোটির বেশি বার দেখা হয়েছে।
সম্প্রতি ‘সিস্টার হং’ নামে এক মধ্যবয়সী পুরুষ নিজেকে নারী পরিচয়ে পরিচিত করে শতাধিক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান এবং তাদের কাছ থেকে উপহার আদায় করেন। ওই ব্যক্তি পরে নিজেই দাবি করেন, তিনি এক হাজারের বেশি পুরুষের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হয়েছেন এবং গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়েছেন।
এই ঘটনার জেরে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসু প্রদেশের পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অশ্লীল ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে তদন্ত চলছে। সিস্টার হংয়ের ঘটনা সামনে আসতেই চীনা নেটিজেনদের একাংশের মধ্যে আলোচনায় আসে ২০১৬ সালের আরেক প্রতারণার কাহিনি। ৯ বছর আগের সেই ঘটনায় এক নারী প্রেমের অভিনয় করে ২০ পুরুষের কাছ থেকে নতুন নতুন আইফোন ৭ উপহার হিসেবে নিয়েছিলেন। পরে সেসব ফোন বিক্রি করে তিনি একটি ফ্ল্যাটের ডাউন পেমেন্ট দেন।
চীনের কিয়েনজিয়াং ইভনিং নিউজের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই নারী শেনজেন শহরের একটি প্রতিষ্ঠানে কেরানির চাকরি করতেন। কম বেতনের এই চাকরি করার সময়ই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে জানান, নিজ শহরে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এতে তাঁর সহকর্মীদের চোখ কপালে ওঠে।
পরে তদন্তে জানা যায়, ওই নারী মাত্র ৬ মাসের মধ্যে একসঙ্গে ২০ জনকে তাঁর প্রেমিক বানান। প্রত্যেককে বলেছিলেন, তাঁকে একটি করে নতুন আইফোন ৭ উপহার দিতে। কেউই জানতে পারেননি যে, তাঁরা ছাড়াও আরও অনেকেই তার প্রেমিক। ওই নারী পরে সবগুলো ফোন অনলাইনে বিক্রি করেন। একটি ইলেকট্রনিক পণ্যের ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের এক কর্মী জানান, ‘আমরা একটি অর্ডার পাই যেখানে এক নারী ২০টি একদম নতুন আইফোন ৭ বিক্রি করতে চান। বেশির ভাগ ফোনের প্যাকেটই তখনো খোলা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ফোন ৬ হাজার ইউয়ানের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। সব মিলিয়ে তিনি প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান (প্রায় ১৭ হাজার মার্কিন ডলার) আয় করেছিলেন।’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ওই নারীর এক সহকর্মী বলেন, ‘ওর আচরণে কখনোই বোঝা যায়নি, সে এমন কিছু করতে পারে। সে খুব প্রাণবন্ত, সবার সঙ্গে ভালোভাবে মিশে চলে। আমরা কেউই ভাবিনি, সে টাকা জোগাড়ের জন্য এমন কাজ করবে। শুনেছি কোম্পানি ওকে চাকরিচ্যুত করার পরিকল্পনা করছে।’
তবে ওই নারী পরে কোনো ধরনের আইনি শাস্তি পেয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি।