সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটকে ৩-৪ বছর আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়: ফায়ার সার্ভিস


রাজধানীর গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটকে তিন-চার বছর আগেও অগ্নিনির্বাপণের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। আজ শনিবার (২ আগস্ট) সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ঢাকার সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘এই মার্কেটে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কোনো সেফটি প্ল্যান নেই। কোনো অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা নেই। বারবার আমরা নোটিশ দিয়ে যাচ্ছি। আমরা একবার তিন-চার বছর আগে এই ভবনটিকে অগ্নিনির্বাপণের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করেছি। এখানে আমরা সামান্য কিছু ফায়ার এক্সটিংগুইশার পেয়েছি। এ ছাড়া কোনো অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ইলেকট্রিক তারগুলো (বিদ্যুতের তার) এলোমেলোভাবে খোলা অবস্থায় আছে। হাজার কোটি টাকার মার্কেটে এভাবে এলোমেলোভাবে তার রাখা কোনোভাবেই উচিত না। তারের কারণেই আগুনটি একদিক থেকে আরেক দিকে চলে গেছে এবং প্রচণ্ড ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়েছে।’
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের পঞ্চম তলায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে রওনা দেয়। পরে আগুনের ভয়াবহতা দেখে সদরঘাট ফায়ার স্টেশন এবং সদর দপ্তর থেকে ট্রাক-মাউন্টেড ল্যাডারসহ (টিটিএল) ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। তবে এর মধ্যে দুটি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়। পরে বেলা ১১টা ১২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা।

পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান জানান, এটি ইলেকট্রনিক মার্কেট ছিল, এখানে প্লাস্টিকের দ্রব্য, মোবাইল এক্সেসরিজও ছিল। আগুন লেগে যা থেকে প্রচণ্ড ধোঁয়ার সৃষ্টি করে। মার্কেটের পঞ্চম তলায় যে গুদামগুলো ছিল, সেখানে আগুন লাগে। কিন্তু একেবারে নিচতলা পর্যন্ত ধোঁয়া চলে আসে। ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে এই ধোঁয়ার ভেতরে কাজ করেন এবং আগুনের উৎস স্থল খুঁজে পান। পরে দুটি দোকানের শাটার খুলে আগুন নেভানো হয়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে বলা যাবে।
সাধারণ মানুষের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের বেগ পেতে হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ওপরে উঠে গেছে। কিন্তু নিচতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত অনেক লোক ছিল। পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা চেষ্টা করেছেন তাদের বের করে দিতে। কিন্তু তারা বের হননি। যে কারণে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে।’