ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাতি


ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার নাতি ও জেডিএসের সাবেক সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বেঙ্গালুরুর একটি আদালত দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে চলা এই মামলার রায় আজ শুক্রবার ঘোষণা করেছেন। এই রায়ের মাধ্যমে কার্যত তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি ঘটল বলে মনে করা হচ্ছে।
মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর। গত সাত মাসে ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয় এবং ফরেনসিক রিপোর্ট, ভিডিও ক্লিপসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়। আদালতে জমা পড়া ফরেনসিক রিপোর্ট ও সাইবার ক্রাইম স্টেশনের তথ্য—সবকিছুই প্রজ্জ্বলের বিপক্ষে গিয়েছিল।
এই মামলার তদন্তে সিআইডির বিশেষ দল ঘটনাস্থল থেকে ১২৩টি প্রমাণ সংগ্রহ করে এবং ২ হাজার পাতার চার্জশিট জমা দেয়। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছিল সাইবার ক্রাইম বিভাগ। অভিযোগ, প্রজ্জ্বল তাঁর বাড়ির পরিচারিকাদের টানা তিন বছর ধরে যৌন হেনস্তা করেছেন। একটি ভিডিও কল রেকর্ড করা ও তা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগের পর তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে চতুর্থ মামলা রুজু হয়। এরপরই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
দুবার ফ্লাইটের টিকিট কাটার পর বাতিল করে দেন প্রজ্জ্বল। পরে আগাম জামিনের আবেদন করার সময় স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তিনি দেশে ফিরে আসতে চলেছেন। শেষ পর্যন্ত, মাঝরাতে কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দরে পৌঁছতেই তিন মহিলা পুলিশ সদস্যের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় শুধু প্রজ্জ্বল নন, তাঁর বড় ভাই সুরজ রেভান্না ও বাবা এইচ ডি রেভান্নার বিরুদ্ধেও যৌন নিগ্রহ ও অপহরণের অভিযোগ ওঠে। সুরজ রেভান্না চেতন কে এস নামের এক ব্যক্তিকে বিবস্ত্র করে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
রায় ঘোষণার পরে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রজ্জ্বল রেভান্না। তিনি দাবি করেন, এই রায় সঠিক নয়। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্ত যে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শেষ সীমানা টেনে দিল, তা বলাই বাহুল্য। এখন দেখার বিষয়, তিনি উচ্চ আদালতে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানান কি না।