হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড, ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন ২


হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড, ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন ২
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৭: ১১
আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নওগাঁয় অপহরণ করে হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় আরও দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সব আসামিই আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মিশু (১৯) ও পিংকি (৩০)। এ মামলার আরও দুই আসামি, হুজাইফা ও সাজু আহমেদের বয়স ১৮ বছর না হওয়ায় তাদের ১০ বছর করে আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকর করতে হবে এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। অন্যদিকে যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে বদলগাছীর খাদাইল গ্রামের স্কুলছাত্র নাজমুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেন আসামিরা। নাজমুলের বাবার কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হলে সেটি না পেয়ে পরদিন তাঁকে হত্যা করা হয়। মরদেহ বস্তায় ভরে আক্কেলপুর রেলগেটের পাশে একটি ডোবায় ফেলে রাখা হয়। ঘটনার পর বদলগাছী থানায় মামলা করেন নাজমুলের বাবা। তদন্ত শেষে চার আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
এ ছাড়া, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার রায়ে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মোরশেদ (৩৫) ও রবিউল ইসলাম (৩৮)। একই মামলায় অভিযুক্ত সুলতানা পারভিনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১০ সালে মান্দার চকদেবীরাম গ্রামের এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভনে মোরশেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন রবিউল। ধর্ষণের সময় ভিডিও ধারণ করে তা পরবর্তী সময় ছড়িয়ে দেন তিনি।
ওই ভিডিও প্রথম স্বামীর কাছে পৌঁছালে তিনি স্ত্রীকে তালাক দেন। পরে দ্বিতীয় বিয়ের পরও রবিউল ওই ভিডিও নতুন স্বামীর কাছেও পাঠান। এতে তিনিও স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরে ভুক্তভোগী আদালতে অভিযোগ করলে তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলে। মামলায় ১২ জন সাক্ষ্য দেন। সব দিক বিবেচনায় আদালত মোরশেদ ও রবিউলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
দুই মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। আদালতের এই রায় ভুক্তভোগীদের পরিবার ও সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সাহস জোগাবে।’