শিরোনাম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্টেডিয়ামের মাঠ খুঁড়ে মেলা, বন্ধ খেলাধুলাউচ্চকক্ষে পিআর, গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনজুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির দাবি এনসিপিরসরকার জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে গড়িমসি করলে বুঝতে হবে ‘কুচ কালা হ্যায়’: তাহেরসারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ২৮৮বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রায় জালিয়াতির মামলায় আরও দুটি ধারা সংযোজনএ যেন কল্পকাহিনী—৩০ বছর ধরে হিমায়িত ভ্রূণ থেকে জন্ম নিল মার্কিন শিশুজুলাই সনদকে গেজেট নোটিফিকেশন করার নতুন প্রস্তাব বিএনপিরজাতীয় সনদের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শেষে ১৯ বিষয়ে ঐকমত্য: আলী রীয়াজবরিশালে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

বিপুল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্পের শুল্ক ১৫ শতাংশে নামাল দ. কোরিয়া

বিপুল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্পের শুল্ক ১৫ শতাংশে নামাল দ. কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। তিনি এটিকে ‘সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত বাণিজ্য চুক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে, বিনিময়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আগামী ১ আগস্ট কার্যকর হতে যাচ্ছে ট্রাম্পের শুল্ক। তার ঠিক আগের দিন এই ঘোষণা এল। এই সময়সীমার মধ্যে যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে না, তাদের ওপর আরও বেশি শুল্ক আরোপের হুমকি ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য তা ছিল ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী জাপান এই সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১৫ শতাংশ হারে শুল্কে চুক্তি করে। তাই দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর চাপ বেড়েছিল। তবে এই চুক্তি দেশটির জন্য একটি বড় স্বস্তি। চুক্তির আওতায় দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তত ৫৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত থাকার পর এই চুক্তিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য গাড়ি ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ হবে। তবে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক ধার্য করা হবে ৫০ শতাংশ হারে, যা বিশ্বব্যাপী ট্রাম্প প্রশাসনের নির্ধারিত হার।

তবুও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা লি জে মিয়ং এই চুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেছেন, এতে করে দক্ষিণ কোরিয়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমান বা ভালো অবস্থানে পৌঁছাবে। এই চুক্তির একটি বড় অর্জন হলো—দক্ষিণ কোরিয়া তাদের অন্যতম ‘চূড়ান্ত সীমা’ অতিক্রম করতে হয়নি। সেটি হলো—যুক্তরাষ্ট্রের চাল ও গরুর মাংসের বাজার আরও উন্মুক্ত করার দাবি তারা মানেনি। কৃষি খাত রক্ষায় দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের চালের পরিমাণ ও গরুর মাংসের জাতের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। এ নিয়ম শিথিল হলে কৃষকেরা বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছিল।

৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির মধ্যে ১৫০ বিলিয়ন ডলার যাবে যুক্তরাষ্ট্রে জাহাজ নির্মাণে—যার মধ্যে যুদ্ধজাহাজও রয়েছে। এটি ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার কৌশলের মূলভিত্তি। চীন বাদে বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি জাহাজ নির্মাণ করে দক্ষিণ কোরিয়া। আর এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী ও জাহাজ নির্মাণ খাত অবনমনের দিকে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রশমিত করেই দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের শিল্পখাতকেও মজবুত করতে চাচ্ছে। বাকি বিনিয়োগের একটি বড় অংশ আসলে আগের বাইডেন প্রশাসনের সময় ঘোষিত প্রতিশ্রুতি, যা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে অর্থ সহায়তা। এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক জোটে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এখনো প্রতি বছর উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষায় ওয়াশিংটন বিপুল অর্থ ব্যয় করে।

এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, দক্ষিণ কোরিয়া যদি সামরিক ব্যয়ের অংশ না বাড়ায়, তাহলে তিনি মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করবেন। এই হুমকি এখনো দক্ষিণ কোরিয়ার মাথার ওপর ঝুলে আছে। চুক্তির সময় দক্ষিণ কোরিয়ার আলোচকেরা ভেবেছিলেন, হয়তো এই সামরিক ব্যয় ইস্যুটিও একসঙ্গে সমাধান করা যাবে।

কিন্তু এখন ঠিক হয়েছে, এই আলোচনাটি হবে দুই সপ্তাহ পরে প্রেসিডেন্ট লির ওয়াশিংটন সফরের সময়—যেখানে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর শীর্ষ বৈঠক হবে। তখন সিউলকে হয়তো আরও বড় অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হতে পারে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে আবার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর একের পর এক আমদানি শুল্ক বসিয়েছেন এবং আরও শুল্কের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলছেন, এসব শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনশীলতা বাড়াবে এবং চাকরি রক্ষা করবে।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর এই অনিয়ন্ত্রিত বাণিজ্যনীতি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button