শিরোনাম

নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় মহিলা পরিষদের বিস্ময়

নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় মহিলা পরিষদের বিস্ময়

রাজনৈতিক দলগুলো সংসদে নারী আসন নিয়ে এখন পর্যন্ত ঐকমত্যে না পৌঁছানোয় বিস্ময় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। নারী আসনে মনোনয়ন প্রথা বাতিল করে সরাসরি নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছে তারা। আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংসদে নারী আসনের বিষয়ে আলোচনায় ১৪ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে আসতে পারেনি। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এ বিষয়ে গভীর বিস্ময় প্রকাশ করছে।

‘এ ছাড়া আমরা আরও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি, সংসদে নারী আসনের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই আলোচনায় রাজনৈতিক দলের নারী প্রতিনিধিত্ব, অন্তর্বর্তী সরকারের নারী কমিশনের প্রতিনিধিত্ব ও দেশের নারী সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব অনুপস্থিত।

‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে, জাতীয় সংসদে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্যের উপস্থিতি নারী সমাজের স্বার্থ ও মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে এবং জনগণের কাছে তাঁদের দায়বদ্ধতা তৈরি করবে।

‘অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের বিধান থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ নারী প্রতিনিধিত্ব হয় না। সাধারণত নারী আসনে যাঁরা মনোনীত হয়ে সংসদে গিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারেননি এবং যথাযথ মর্যাদা ও দায়িত্ব পাননি। নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকা না থাকায় এবং জনগণের ভোটে সরাসরি নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণ ও নারী প্রতিনিধিদের কাছে দায়বদ্ধতা ছিল না। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোও দলীয় স্বার্থে তাঁদের ব্যবহার করেছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘স্থানীয় সরকারের সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিধানটি স্থানীয় সরকারে বহুদিন ধরে কার্যকর হয়ে আসছে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হোক। যার মাধ্যমে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত হবে বলে আমরা মনে করি। এই পদ্ধতি দুই অথবা তিন মেয়াদের জন্য বহাল রাখা যেতে পারে।’

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছে। তারা জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি এবং জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের দাবিও জানিয়ে আসছে, যাতে সংরক্ষিত নারী আসনের নারী প্রতিনিধিরা মনোনয়নের মাধ্যমে নয়, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে সমান অধিকার, সমমর্যাদা ও দায়িত্বের সঙ্গে ফলপ্রসূ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেন।

মহিলা পরিষদ মনে করে, সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা নারী প্রার্থীদের নির্বাচনী এলাকা গড়ে তুলবে এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা গণতান্ত্রিক চর্চাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে আরও বিস্তৃত ও অর্থবহ করে তুলবে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button