শিরোনাম
পাল্টা শুল্ক প্রতিযোগীদের সমান এটাই স্বস্তির: বিজিএমইএ সভাপতিভারত ম্যাচে পাকিস্তানের জার্সি পরা দর্শক ঢুকতে না দেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে গুলশানে চাঁদাবাজি, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা জানে আলম গ্রেপ্তারএকদিনে এনবিআরের ৪৯ কর্মকর্তাকে বদলিশাপলা বিলে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ গেল দুজনেরবিবিসির প্রতিবেদন /বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের সেই ‘জয়’, যার উচ্চমূল্য দিতে হবে সবাইকেনজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদ ধসের ঘটনা তদন্তে ইউজিসির কমিটিভারত-ইংল্যান্ডের খেলা দেখবেন কোথায়প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিল অনুমোদনে ঘুষ দাবির অভিযোগআ.লীগ নেতাকে বাড়িতে লুকানোর সুযোগ দিয়ে বহিষ্কার হলেন তাঁতী দলের সভাপতি

রাশিয়ায় ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও কেন বড় সুনামি হলো না

রাশিয়ায় ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও কেন বড় সুনামি হলো না

রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার খবর পাওয়ামাত্রই বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পবিদদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় ও জটিল টেকটোনিক সীমান্তগুলোর একটি, যেখানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট উত্তর আমেরিকান প্লেটের নিচে ঢুকে যাচ্ছে এবং এর খুব কাছেই রয়েছে ইউরেশিয়ান প্লেট। এমন ভূগঠনবিশিষ্ট অঞ্চলগুলোয় সাধারণত ভয়াবহ ও ব্যাপক পরিসরে সুনামি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই অঞ্চলে ১৯৫২ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প রাশিয়ার একটি শহরকে গিলে খেয়েছিল এবং হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ব্যাপক ক্ষতি করেছিল।

প্রাথমিক বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাসে জানা গিয়েছিল, এবারের ভূমিকম্পে প্রশান্ত মহাসাগরের আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশ প্লাবিত হতে পারে। জাপানের উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লাখো মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়, হাওয়াইয়েও অনেককে উচ্চভূমির দিকে পাঠানো হয়। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলীয় অঞ্চলেও মানুষকে সাগর থেকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপে ছোট আকারের সুনামির দেখা মিললে আশঙ্কা আরও বাড়ে যে ঢেউয়ের উচ্চতা ১০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।

বাস্তবে দেখা গেল, আতঙ্ক যতটা ছিল, ক্ষয়ক্ষতি ততটা নয়। জাপান ও হাওয়াইয়ে ৪ ফুটের বেশি উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়েছে। এ দুই জায়গায় সুনামি সতর্কতা কমিয়ে আনা হয়েছে এবং কিছু এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকজনকে আবার ঘরে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বড় সুনামি না হওয়ার কারণ

প্রতিটি দেশ ভিন্নভাবে সুনামি সতর্কতা জারি করে। যদি ধারণা করা হয় যে সুনামি ধেয়ে আসছে এবং তা বিপজ্জনক হতে পারে, তাহলে উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কতটা উচ্চতার ঢেউ আসবে, তা প্রাথমিক পর্যায়ে বলা কঠিন।

স্বতন্ত্র ভূমিকম্পবিজ্ঞানী অ্যামিলকার কারেরা-সেভালোস বলেন, ‘সুনামির শক্তি সব দিকে সমানভাবে ছড়ায় না। সুনামির ঢেউ চারদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে না। কারণ, ভূমিকম্পের ফাটল কোনো সুশৃঙ্খল সরলরেখায় সৃষ্টি হয় না। একইভাবে সাগরতলের নড়াচড়াও একমুখী বা মসৃণভাবে ঘটে না।’

ভূমিকম্প ও সুনামিবিজ্ঞানী ডিয়েগো মেলগার বলেন, ‘প্রাথমিক সতর্কতা ভূমিকম্পের অবস্থান ও মাত্রার ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। তবে শুধু এই তথ্য দিয়ে কতটা পানি সরে যাবে কিংবা কোথায় ঢেউ বেশি হবে, তা বলা যায় না। সেটা বোঝার জন্য আরও বিশ্লেষণ দরকার, যা সাধারণত ভূমিকম্পের ১ থেকে ২ ঘণ্টা পর জানা যায়।’

এই তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্ভুলভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে বিজ্ঞানীদের সময় লাগে ১ থেকে ২ ঘণ্টা।

এ ধরনের সুনামিকে নজরে রাখতে সাহায্য করে গভীর সাগরের চাপ সংবেদক নেটওয়ার্ক। এগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সতর্কতা হালনাগাদ করেন। তবে বিজ্ঞানী মেলগার বলেন, বর্তমানে গভীর সমুদ্রে বসানো কিছু প্রেশার সেন্সরের মাধ্যমে সুনামির গতিপথ ও শক্তি পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে এই নেটওয়ার্ক প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়া ঢেউয়ের জটিলতা ধরতে এখনো সক্ষম নয়।

সুনামির ঢেউ উপকূলে কতটা উচ্চতায় উঠবে, তা নির্ভর করে সাগরতলের গঠন ও উপকূলীয় ভূপ্রকৃতির ওপর।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ভূমিকম্পবিজ্ঞানী স্টিফেন হিক্স বলেন, উপসাগর বা দ্বীপের মতো ভূপ্রকৃতি ঢেউয়ের গতিপথ পরিবর্তন করতে বা ঢেউকে আরও উঁচু করতে পারে। আবার দ্বীপের আশপাশে ঢেউ বেঁকে যেতে পারে।

ভূমিকম্প ও সুনামিবিজ্ঞানী ডিয়েগো মেলগার বলেন, প্রথমত, সঠিকভাবে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল, এটি একটি বড় সাফল্য। সুনামি ৩০ ফুট না হলেও তীব্র ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, এমনকি কম উচ্চতার ঢেউও মানুষ ও স্থাপনা ভাসিয়ে নিতে পারে। এখন পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, প্রাণহানির সংখ্যা কম, এটি আংশিকভাবে সম্ভব হয়েছে দ্রুত সতর্কতা ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে।

তথ্যসূত্র: সায়েন্টিফিক আমেরিকান



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button