ইতিবাচক চিন্তায় রাগ নিয়ন্ত্রণে থাকে


অতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় কী। রাগের কারণে সবার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করি, সব থেকে বেশি আমার পার্টনারের সঙ্গে। রাগের মাথায় যেটা বলব, সেটাই করতে হবে! সে সময় সে ঠান্ডা মাথায় আমার সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু আমি তখনো শান্ত হতে পারি না। তবে আমার রাগ বেশিক্ষণ থাকে না। ১০-১৫ মিনিট পরে সব থেমে যায়। আমার পার্টনার আমাকে খুব সাপোর্ট করলেও অতিরিক্ত জেদ বা রাগের কারণে আমাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। সেটা আমি চাই না। রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কী করতে পারি? নাফিজা, জলঢাকা।
প্রথমেই বলি, আগে বুঝতে হবে রাগের কারণটা কী। অনেক কারণেই রাগ হতে পারে। কখনো তা খুব যৌক্তিক কারণেও হয়ে থাকে। তবে কিছু হরমোনঘটিত শারীরিক সমস্যা; যেমন থাইরয়েড হরমোনের আধিক্য, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনে এমন হতে পারে। আবার স্ট্রোক-পরবর্তী ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে। বেশ কিছু মানসিক রোগ হলেও মানুষের মধ্যে রাগ করার প্রবণতা বেড়ে যায়। যেমন বিষণ্নতা, উদ্বেগ, সিজোফ্রেনিয়া, ব্যক্তিত্বের সমস্যা, বিশেষ করে বর্ডার লাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার। এ ছাড়া মাদকাসক্তিও রাগ বাড়িয়ে দেওয়ার কারণ।
তবে বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, আপনার ব্যক্তিত্বের সমস্যা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে হয়তো প্রিয়জনকে হারাবার ভয় থেকে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা।
আগে রুটিন চেকআপ করিয়ে নিন; পাশাপাশি নিজের সঙ্গে নিজের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন। প্রয়োজন হলে নোট রাখুন—কোন কারণে রেগে যাচ্ছেন, রাগের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক
কি না, রাগের কারণ এক, নাকি একাধিক। এরপর কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কোনো মানসিক রোগ থেকে রাগ সৃষ্টি হলে যথাযথ চিকিৎসায় তা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তবে রাগের সঙ্গে মানসিক রোগের সম্পৃক্ততা না থাকলে পার্টনারের সঙ্গে আলোচনা করুন। রাগের সময় দ্রুত স্থান ত্যাগ করুন। মানুষটির থেকেও সে সময় দূরত্ব বজায় রাখুন। ঠান্ডা এক গ্লাস পানি পান করুন। একটি সুন্দর স্মৃতির কথা ভাবুন।
রাগ করলে রক্তচাপ বাড়ে, স্ট্রেস হরমোন রক্তে মিশে শারীরিক চাপ বাড়ায়, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ায়। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। কাজেই শিথিলায়ন করুন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। ইতিবাচক চিন্তায় মনোযোগ বাড়ান। দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের চেষ্টা করতে থাকুন।
পরামর্শ দিয়েছেন: সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা