ফুলে ফুলে সেজেছে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার


বর্ষার স্নিগ্ধতায় নতুন রূপ পেয়েছে নওগাঁর বদলগাছীর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। হাজার বছরের পুরোনো এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে এখন সবুজের সমারোহ, আর তার গায়ে লেগেছে রঙিন ফুলের ছোঁয়া। বর্ষার মেঘলা আকাশ, টানা বৃষ্টির ফোঁটা আর বাতাসে প্রশান্তির ছোঁয়ায় এ প্রাচীন স্থাপনা হয়ে উঠেছে আরও মোহময়, আরও জীবন্ত।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ১৯৮৫ সালে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্ষার শুরু থেকেই বিহারজুড়ে যেন নতুন এক প্রাণের স্পর্শ লেগেছে। লাল, হলুদ, কমলা, বেগুনি ও সাদা রঙের ফুলে ঢেকে গেছে পুরো চত্বর। তার সঙ্গে আলপনায় সাজানো পথ, পাতালতা দিয়ে তৈরি পশুপাখির প্রতিকৃতি আর পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে প্রতিটি কোণ।
প্রতিদিন শত শত পর্যটক ছুটে আসছেন পাহাড়পুরে। কেউ ইতিহাস ও প্রকৃতির মেলবন্ধনের স্মৃতি ধরে রাখছেন মোবাইল ফোনের ফ্রেমে, কেউ হারিয়ে যাচ্ছেন প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনে খোদাই করা নিখুঁত শিল্পকর্মে।

রাজশাহী থেকে আসা এক পর্যটক ডা. দীপিকা দীপা বলেন, ‘ফুলে ফুলে ভরে গেছে চারদিক। আমরা অনেক ছবি তুলেছি। এখানকার পরিবেশে একধরনের প্রশান্তি আছে, যা শহরের কোলাহলে মেলে না। সব মিলে খুব ভালো লাগছে।’
জয়পুরহাট থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, ‘এখানে মনে হয় যেন ইতিহাস আর প্রকৃতি একসঙ্গে হাত ধরেছে। এমন পরিবেশে মন ভালো হয়ে যায়। অন্যরকম একটা শান্তি অনুভব করি। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত যতগুলো জায়গায় ভ্রমণ করেছি, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের আয়তন আমার চোখে সবচেয়ে বড়।’

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের কাস্টডিয়ান ফজলুল করিম আরজু বলেন, ‘এখানে যাঁরা আসেন, তাঁরা শুধু প্রাচীন স্থাপনা দেখেই যান না। ফুলপ্রেমীদের জন্য বর্ষা ও শীতে নানা রকম ফুল রয়েছে। কারুশিল্পপ্রেমী বা পশুপাখি দেখতে আগ্রহীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাখিদের জন্য গাছে ঝোলানো হয়েছে মাটির হাঁড়ি। ফলে দর্শনার্থীরা একসঙ্গে হেরিটেজ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।’