রাজস্ব আয় বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত সেবা নেই


২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আয় দাঁড়িয়েছে ৭৮ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৬৩৮ টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯৮ হাজার ৭৯৪ টাকা বেশি। তবে রাজস্ব আদায়ের এই সাফল্যের বিপরীতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং কাঙ্ক্ষিত সেবা এখনো অনুপস্থিত, যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য বছরে ভারত থেকে ৯৫ হাজার ৮৯৯টি ট্রাকে ২০ লাখ ১১ হাজার ২৬৭ টন পণ্য আমদানি হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৪৭ হাজার ৪৩৭টি ট্রাকের মাধ্যমে ৪ লাখ ২১ হাজার ৭১৩ টন পণ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি ছিল ২১ লাখ ৩০ হাজার ২২৮ টন এবং রপ্তানি ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭৩ টন। যদিও আমদানির পরিমাণ কমেছে; রাজস্ব আয় বেড়েছে মূলত পণ্যের ওজন নির্ধারণে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ফলে।
রাজস্ব বাড়লেও বন্দরের অবকাঠামোগত দুর্বলতা এখনো দূর হয়নি। শেড ও ইয়ার্ড সংকটে খোলা আকাশের নিচে পণ্য রাখতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা। ফলে বর্ষায় গুদামে পানি ঢুকে পণ্য নষ্ট হওয়ার ঘটনা নিয়মিত। অগ্নিকাণ্ড, ভেজা মালামাল ও দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে প্রতিবছর ক্ষতির মুখে পড়ছেন আমদানিকারকেরা।
আমদানিকারক উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘বন্দরে পর্যাপ্ত শেড, ইয়ার্ড নেই। খোলা আকাশের নিচে পণ্য রাখতে হয়। বর্ষা এলেই গুদামে পানি ঢুকে পণ্য নষ্ট হয়। কোটি কোটি টাকা রাজস্ব দিচ্ছি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছি না। ক্ষতির দায় কেউ নেয় না।’
বেনাপোল বন্দর আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, বন্দরে মাত্র ৩৩টি শেড, ৩টি ওপেন ইয়ার্ড, ১টি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড এবং ১টি রপ্তানি টার্মিনাল রয়েছে। বার্ষিক প্রায় ৩০ লাখ টন পণ্য ব্যবস্থাপনায় এটি অপর্যাপ্ত।
বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, আমদানি পণ্যের ওজন স্কেলে এখন সঠিক পরিমাপ হয়। এ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহির কারণে বন্দরের আয় বেড়েছে। পণ্য রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা বাড়ানোর জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নকাজ চলমান।