ভারী বর্ষণে ভারতে ১,৬২৬ জনের মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি অন্ধ্র প্রদেশে


ভারতে চলমান বর্ষায় ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ হাজার ৬২৬ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজ্যসভায় এই তথ্য প্রকাশ করেছে। জুলাই মাস শেষ হতেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ—সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৩৪৩ জনের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, মৃত ২৪৩ জন। তৃতীয় হিমাচল প্রদেশ, মৃত্যু হয়েছে ১৯৫ জনের। চতুর্থ স্থানে কর্ণাটক (১০২ জনের মৃত্যু) ও পঞ্চম বিহার (১০১ জন)। কেন্দ্র জানিয়েছে, এই পাঁচ রাজ্যেই দেশের মোট মৃত্যুর ৬০ শতাংশ ঘটেছে।
উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ৭১ জনের প্রাণহানি হয়েছে পাহাড়ি রাজ্যটিতে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ। ধ্বংস হয়েছে ৯ দশমিক ৪৭ হেক্টর কৃষিজমি। মারা গেছে ৬৭টি গবাদিপশু ও বহু বন্য প্রাণী।
শুধু মানুষই নয়, বিপর্যয়ের বলি হয়েছে হাজার হাজার পশুও। এ বছর ভারতে এখন পর্যন্ত ৫২ হাজারেরও বেশি পশুর মৃত্যু হয়েছে বর্ষার প্রকোপে। এর মধ্যে শুধু হিমাচল প্রদেশেই মারা গেছে ২৩ হাজার ৯৯২টি পশু। আসামে ১৪ হাজার ২৬৯টি, জম্মু-কাশ্মীরে ১১ হাজার ৬৭টি এবং মধ্যপ্রদেশে ১ হাজার ৬২৫টি পশুর মৃত্যু হয়েছে।
দেশজুড়ে বর্ষার প্রভাবে শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই নেমে এসেছে দুর্যোগের ছায়া। মৌসম ভবনের (ভারতের আবহাওয়া বিভাগের সদর দপ্তর) পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের অধিকাংশ রাজ্যেই বজ্রবিদ্যুৎসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জারি রয়েছে লাল, কমলা ও হলুদ সতর্কতা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একাধিক দল। চলছে লাগাতার উদ্ধারকাজ। তবুও মৃত্যু ও ক্ষতির পরিমাণ ঠেকানো যাচ্ছে না।
আগস্টেও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। বর্ষা যে শুধুই রোমান্টিক নয়, বরং জীবন কেড়ে নেওয়া এক নির্মম মুখও তার আছে—সেই নির্মম সত্যই এবার স্পষ্ট করে দিল রাজ্যসভায় কেন্দ্রের এই রিপোর্ট।