আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে ইউআইইউর অনন্য সাফল্য


বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক রোবোটিকস প্রতিযোগিতা আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ (এআরসি) ২০২৫ সালে বড় সাফল্য পেয়েছে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ‘ইউআইইউ মার্স রোভার টিম’। গত ২৩-২৭ জুলাই তুরস্কের আনাতোলিয়ায় এ প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতার ফাইনালে বিশ্বের ছয়টি দেশের ১৮টি দলের মধ্যে ইউআইইউ মার্স রোভার টিম বিশ্বে তৃতীয় এবং এশিয়ায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে। শুধু তা-ই নয়, দলটি পেয়েছে ‘সেরা অটোনোমাস ও ড্রাইভিং কন্ট্রোল সিস্টেম’ এবং ‘সেরা সায়েন্স টিম’—দুটি বিশেষ পুরস্কারও। প্রতিযোগিতাটির আয়োজক ছিল তুরস্কের স্পেস এক্সপ্লোরেশন সোসাইটি (ইউকেট)। প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে।
সাফল্যের পেছনে সংগঠিত দল
৩৫ সদস্যবিশিষ্ট এই রোভার দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন মো. মোসফিকুর রহমান। কো-লিডার ছিলেন গাজী তাওসিফ তুরাবি। দলের বিভিন্ন বিভাগে ছিলেন সায়েন্স টিমে সাইফ আল সাদ, মেকানিক্যাল টিমে মো. সিয়াম বিন রশীদ, অটোনোমাস টিমে আহমেদ জেবাইল সৌখিন, কমিউনিকেশন ও এরিয়াল টিমে ইফতে ফয়সাল। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের মধ্যে ছিলেন নাজমুল হাসান আথিন, দিগন্ত কর্মকার ও শেখ সাকিব হোসেন। দলের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন সিএসই অনুষদ ডিন ড. হাসান সারওয়ার। মেন্টর ছিলেন আবিদ হোসাইন।
শুরুর গল্প ও প্রযুক্তি
২০২২ সালে ইউআইইউর কিছু উদ্যমী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের উদ্যোগে গঠিত হয় এই রোভার টিম। মেন্টর আবিদ হোসাইন বলেন, ‘শুরুতে সীমিত সুযোগ-সুবিধা থাকলেও দলীয় নিষ্ঠা, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী মানসিকতার মাধ্যমে তাঁরা দ্রুত এগিয়ে যায়। এবারের প্রতিযোগিতায় রোভারের মূল কাজ ছিল মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ অনুকরণ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেভিগেশন, নমুনা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
দীর্ঘ প্রস্তুতি, রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম আর টেকনিক্যাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ফলেই এই সাফল্য এসেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমরা গর্বিত।
এর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত সেন্সর, এআই-ভিত্তিক কন্ট্রোল সিস্টেম, রোবোটিক আর্ম ও শক্তিশালী টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি।’
অর্জনের অনুভূতি
দলনেতা মোসফিকুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ প্রস্তুতি, রাতদিন পরিশ্রম আর টেকনিক্যাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ফলে এই সাফল্য এসেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
এই সাফল্যকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে ইউআইইউ মার্স রোভার টিম আরও উন্নত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তাদের লক্ষ্য দেশের জন্য সম্মান ও গর্ব বয়ে আনা।