বয়স যাচাইয়ে এআই ব্যবহার করবে ইউটিউব


কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে ইউটিউব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করে তাদের জন্য উপযুক্ত কনটেন্ট দেখানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এক ব্লগ পোস্টে ইউটিউবের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট পরিচালক জেমস বেসার জানান, ব্যবহারকারীরা ইউটিউবে কী ধরনের ভিডিও দেখেছে, কোন ক্যাটাগরির ভিডিও দেখেছে এবং কত দিন ধরে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে—এসব বিশ্লেষণ করেই এআই প্রযুক্তি বয়স নির্ধারণ করবে। এই পদ্ধতিতে বয়স যাচাইয়ের সময় ব্যবহারকারীর দেওয়া জন্ম তারিখ বিবেচনায় নেওয়া হবে না।
বয়স ১৮ বছরের নিচে নির্ধারিত হলে ওই ব্যবহারকারীর কনটেন্টে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। যেমন: ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন নিষ্ক্রিয় করা, নির্দিষ্ট ধরনের ভিডিও বারবার দেখার সুযোগ সীমিত করা ইত্যাদি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুলবশত কোনো ব্যবহারকারীর বয়স ভুল নির্ধারিত হলে তারা পরিচয়পত্র আপলোড করে তা সংশোধনের সুযোগ পাবেন।
ইউটিউব ব্লগে বলা হয়েছে, ‘আমরা শুধু তাদেরই বয়স সীমাবদ্ধ কনটেন্ট দেখতে দেব, যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি বলে অনুমান বা যাচাই করা হয়েছে।’
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি পিউ জরিপ অনুযায়ী, কিশোর–কিশোরীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ইউটিউব। ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোরদের মধ্যে ৯০ শতাংশ ইউটিউব ব্যবহার করেন, যেখানে টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬৩ শতাংশ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই বয়স নির্ধারণ প্রযুক্তি চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী নীল মোহন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আগের চালু করা ‘সুপারভাইজড অ্যাকাউন্ট’ ফিচারটিকে আরও শক্তিশালী করা হবে। সুপারভাইজড অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানের ইউটিউব ব্যবহারের ওপর নজরদারি করতে পারেন।
এ ছাড়া ইউটিউব বিভিন্ন সময়ে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষতিকর কনটেন্ট চিহ্নিত ও মুছে দিয়েছে। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউটিউব তাদের নীতিমালায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। এখন তারা ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’কে নিরাপত্তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
ইউটিউব জানিয়েছে, তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ব্যবহারকারীর ওপর এই বয়স নির্ধারণ প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করবে। এর সফলতা প্রমাণিত হলে বিশ্বব্যাপী এই প্রযুক্তি চালু করা হবে। ইতিমধ্যে বিশ্বের কিছু অঞ্চলে প্রযুক্তিটি ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও জানায় ইউটিউব, যদিও সেগুলোর নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
তথ্যসূত্র: সিবিএস নিউজ