তিস্তার পানি কমছে, বাড়ছে ভাঙন


তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও নতুন করে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। ঢেউয়ের আঘাতে নদীতীর, ফসলি জমি ও বসতভিটা ভাঙতে শুরু করেছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিস্তাপারের বাসিন্দারা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ডিমলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের কিসামতচর গ্রামে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। তবে কোথায় নিয়ে যাবেন, তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
চরের বাসিন্দা বিধবা শিরিনা বেগম বলেন, ‘লোকজনের সহায়তায় দুইটা টিনের ঘর সরাতে পারছি। কিন্তু ৬ শতাংশ জমির বসতভিটা চোখের সামনে নদীতে চলে গেল।’ বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর এই এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় কৃষক ময়নাল আলী জানান, গত দুই মাসে তাঁর তিন বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন মাত্র ১০ শতকের ওপর বসতভিটা ছিল। সেটিও নদীতে চলে গেছে। ভাঙন দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি তিনি। কাঁপা গলায় বললেন, ‘শ্যাষসম্বল বসতভিটাটাও আইজ নদীত চলি গেইল, আর কোনো জমি নাই। নদী হামার শোগ শ্যাষ করি দিছে।’
ময়নাল জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘরে দুই-তিন ফুট পানি উঠেছিল। বুধবার সকালে পানি নেমে গেলেও শুরু হয় ভাঙন। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নদীতে বিলীন হয়ে যায় তাঁর শেষ আশ্রয়টুকুও।
খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙন বেড়েই চলেছে। মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র বলছে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ডিমলা উপজেলার কালীগঞ্জ, কিসামতচর, খগারচর, চর খড়িবাড়ি ও বাইশপুকুর গ্রামে তিস্তার ভাঙন শুরু হয়েছে। এসব এলাকায় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি এখন নদীর একেবারে কিনারায়। বহু ফসলি জমি ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।