‘প্রিয় বন্ধু ভারতের’ ওপর ২০-২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে চান ট্রাম্প


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘প্রিয় বন্ধু’ ভারতের ওপর ২০-২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। তবে এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, যার আপাতত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ আগস্ট।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়েছে, স্কটল্যান্ড সফর শেষে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে ট্রাম্পকে বহনকারী রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা (২০–২৫ শতাংশ শুল্ক) হতে পারে। ভারত আমাদের প্রিয় বন্ধু, কিন্তু তারা প্রায় সব দেশের চেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করে। এটা চলতে পারে না।’
এ বিষয়ে এখনো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
এর আগে, গত এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকটি বাণিজ্যিক অংশীদার দেশের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তখন তা আপাতত ১০ শতাংশে সীমিত রেখে আলোচনার জন্য সময় দেওয়া হয়। কিন্তু সময়সীমা একাধিকবার বাড়ানো হলেও ট্রাম্প এখন পর্যন্ত খুব কম দেশ থেকেই চুক্তি আদায় করতে পেরেছেন।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারতের পক্ষে কিছু ‘নির্ধারিত সীমা’ আছে, যা তারা কোনোভাবেই অতিক্রম করবে না। এর মধ্যে রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিনগতভাবে পরিবর্তিত (জিএমও) ফসল আমদানির অনুমতি না দেওয়া এবং দুধ ও গাড়ি খাত পুরোপুরি উন্মুক্ত না করা।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে কিছু খাতে শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—গাড়ির যন্ত্রাংশ ও ওষুধশিল্প। ভারতের কৃষি খাত অত্যন্ত সংবেদনশীল রাজনৈতিক ইস্যু। কোটি কোটি মানুষ এই খাতে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং এটি মোদির বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ ভোটব্যাংক। সামনে বেশ কয়েকটি রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন থাকায় মোদি সরকার এসব প্রশ্নে অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেছেন, ‘আমরা ভারতের বাজারে আরও বেশি মার্কিন পণ্য প্রবেশের সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে দেশটির অবস্থান জানতে আরও সময় চাই।’ এ ছাড়া মঙ্গলবার রয়টার্স জানায়, ভারতের সরকার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ উচ্চ শুল্কের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তবে ইতিমধ্যেই ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির খসড়া কাঠামোতে সই করেছে। পাশাপাশি একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি নিয়েও আলোচনা চলছে, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়ার আশায় রয়েছে ভারত।