ইউরোপ পাঠানোর নামে মিশরে নিয়ে জিম্মি করতেন তাঁরা, দেড় কোটি টাকাসহ পাঁচজন ধরা

ইউরোপ পাঠানোর নামে মিশরে নিয়ে জিম্মি করতেন তাঁরা, দেড় কোটি টাকাসহ পাঁচজন ধরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৬
গ্রেপ্তারকৃত আমিনুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম (৫৬), নূর ইসলাম (৩১), আসাদুজ্জামান (৩৫) ও শাহরিয়ার শেখ মুরাদ (৪২)। ছবি: র্যাব
আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের হোতা আমিনুল ইসলাম (৪৬) ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ ও হাজারীবাগ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১১ নম্বর সেক্টর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে নগদ এক কোটি ছাপ্পান্ন লাখ ছাব্বিশ হাজার টাকা, নয়টি পাসপোর্ট, ১০টি স্মার্টফোন ও ১টি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়। র্যাব থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আমিনুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম (৫৬), নূর ইসলাম (৩১), আসাদুজ্জামান (৩৫) ও শাহরিয়ার শেখ মুরাদ (৪২)। র্যাব জানায়, আমিনুলের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্র সক্রিয় ছিল। এই চক্র বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপে অবৈধভাবে মানুষ পাচার করত। ইউরোপে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিত তারা। বাংলাদেশে আমিনুল এবং লিবিয়ায় অবস্থানরত আবদুল্লাহ নামের একজন এই চক্রটির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করত।
প্রথমে জাল ভিসার মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হতো। পরে মিসর হয়ে লিবিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাচারের চেষ্টা চালাত তারা। হাজারীবাগ থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদীর ভাই জাহিদ হোসেনকে ইতালি পাঠানোর নাম করে আমিনুল ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ধাপে ধাপে টাকা নেওয়ার পর গত ১৩ জুলাই ভুক্তভোগীকে মদিনা হয়ে মিশরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছে অজ্ঞাত আসামিরা তাকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে।
এ ঘটনায় গত ৭ সেপ্টেম্বর হাজারীবাগ থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন-২০১২ এর ৬ /৭ /৮ / ১০ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৬ / ৪২০ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
ক্রাইম জোন ২৪