শিরোনাম

রফিকুল আলমকে কেন্দ্র করে সাতকানিয়া বিএনপিতে বিভক্তি

রফিকুল আলমকে কেন্দ্র করে সাতকানিয়া বিএনপিতে বিভক্তি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ ওঠা বিএনপি নেতা রফিকুল আলমকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপিতে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৫ সালের ওই নির্বাচনে তিনি মেয়র প্রার্থী হয়েও ভোটের দিন দুপুরে আকস্মিকভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। অভিযোগ রয়েছে, এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য ভোটের মাঠ উন্মুক্ত হয়ে যায়। দলের নির্দেশনা ছাড়া এমন কর্মকাণ্ডে তখন তিনি বিতর্কিত হন এবং নেতাদের রোষানলে পড়েন। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে পর্যন্ত রফিকুল আলমকে বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। সেই সময় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নদভীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ও ব্যবসা ছিল। অভিযোগ আছে, গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে তিনি ওইসব নেতাদের সঙ্গে মিলে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে গেছেন।

তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নদভীর সঙ্গে বিএনপি নেতা রফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নদভীর সঙ্গে বিএনপি নেতা রফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

গত বছর আগস্টের পট পরিবর্তনের পর রফিকুল আলম সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুনরায় সক্রিয় হয়েছেন। এর মধ্যেই তিনি দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদও পেয়েছেন। এখন আসন্ন উপজেলা ও পৌরসভা কমিটির শীর্ষ পদ পাওয়ার চেষ্টা করছেন এই নেতা। এতে দলের দুঃসময়ে মাঠে থাকা ত্যাগী ও প্রকৃত নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের মাঝে এ নিয়ে ক্ষোভ ও বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা রফিকুল আলম ’আজকের পত্রিকা’কে বলেন, “পৌর নির্বাচনে ভোটের দিন দুপুর ১২টায় কেন্দ্রের নির্দেশনায় আমি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করি।” সামাজিক ও ব্যবসায়িক সংগঠনের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ছবি তোলার বিষয়ে তিনি বলেন, “সেখানে আমার কী কিছু করার আছে?” তাঁর দাবি, দলের ভেতরের গ্রুপিংয়ের কারণে তার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. ইদ্রিস মিয়া ’আজকের পত্রিকা’কে জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে—নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, “কমিটিতে অবশ্যই ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। এমনভাবে কমিটি করা হবে, যাতে কেউ সমালোচনা করতে না পারে যে আওয়ামী লীগের দোসর কিংবা গত ১৭ বছর যারা আওয়ামী লীগ থেকে সুবিধা নিয়েছে, তারা কমিটিতে জায়গা পেয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, সাতকানিয়া বিএনপিতে ৪৫টি পদের জন্য প্রায় ১৫০০ প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে এবং রফিকুল আলমও তাদের একজন। অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও সতর্কতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দলের প্রকৃত ও ত্যাগী নেতা এবং যাদের এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা আছে, তারাই কমিটিতে আসবে।” তবে তিনি নিশ্চিত করেন যে, ওই পৌর নির্বাচনে দল থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button