শিরোনাম

পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধসে নিহত ২৫০ জনের বেশি, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধসে নিহত ২৫০ জনের বেশি, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

উত্তর পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ বৃষ্টি, ভারী বন্যা ও ভূমিধসের কারণে অন্তত ২৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে বুনের এলাকায় নিহতের সংখ্যা ২১৩-এর বেশি। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে বহু আহতের খবর পাওয়া গেছে।

প্রাদেশিক ও উদ্ধার কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ২০০ জন, বালতিস্তানে ১২ জন এবং আজাদ জম্মু-কাশ্মীরে ১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এনডিএমএ) জানিয়েছে, দেশজুড়ে আরও ২৮ জন আহত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে ১১৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ৩৪টি আংশিক ও ১৪টি সম্পূর্ণ, বালতিস্তানে ১৪টি আংশিক ও ৩টি সম্পূর্ণ এবং আজাদ জম্মু-কাশ্মীরে ২৩টি আংশিক ও ২৮টি সম্পূর্ণ।

ধ্বংসস্তূপে বহু বাড়ি ভেসে গেছে এবং একাধিক এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মোবাইল ফোন টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্যার কবলে পড়া অঞ্চলগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

বাজুড়ের সালারজাই এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ করতে গিয়েছিল খাইবার পাখতুনখাওয়া সরকারের একটি হেলিকপ্টার। খারাপ আবহাওয়ার কারণে মোহম্মদ জেলায় হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়ে এর ভেতরে থাকা পাঁচজন নিহত হয়েছেন। বুনের এলাকায় আরেকটি হেলিকপ্টার উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। নিহতদের ডিএনএ নমুনা লাহোরে পাঠানো হয়েছে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল আশা করা হচ্ছে। আজই তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর জরুরি ভিত্তিতে প্রভাবিত এলাকায় উদ্ধার দল পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, আগামীকাল শোক দিবস পালন করা হবে। তাঁর অফিসের বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘সার প্রদেশে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং শহিদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এনডিএমএকে নির্দেশ দিয়েছেন বালতিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে।

স্বাতের বিদ্যুৎ সরবরাহও বিপর্যস্ত হয়েছে। বন্যার পানি ১৩২ কেভি গ্রিড স্টেশনে প্রবেশ করে ৪১টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। মালাম জাব্বা এলাকায় ১৬টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেসে গেছে। জেলাজুড়ে আরও অনেক খুঁটি ও ট্রান্সফর্মার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ট্রান্সমিশন লাইনের ওপরে পড়া গাছগুলোর কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা আরও বেড়েছে। পেসকো জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করেছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করেছে।

খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রাদেশিক সরকার পরিচালিত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর খান সতর্ক করেছেন, বুনের মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ গ্রাম ধ্বংস হয়েছে, সড়ক নষ্ট এবং অবকাঠামো ভেঙে গেছে।’

বুনের জেলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। হাসপাতালগুলো সতর্ক অবস্থানে আছে। গোহর খান বলেন, ‘আমাদের মূল ফোকাস উদ্ধার ও তল্লাশি কার্যক্রমে। তবে বহু এলাকায় পৌঁছাতে হেলিকপ্টার অপরিহার্য। এই মুহূর্তে রাজনীতি করার সময় নয়।’


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button