শিরোনাম

৫২ কোটি টাকায় নিউইয়র্কে বিক্রি হলো মঙ্গলগ্রহের পাথর, ভাগ চায় নাইজারও

৫২ কোটি টাকায় নিউইয়র্কে বিক্রি হলো মঙ্গলগ্রহের পাথর, ভাগ চায় নাইজারও

পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত পাওয়া মঙ্গলগ্রহের সবচেয়ে বড় উল্কাপিণ্ড বা পাথরটির ওজন প্রায় ২৪.৭ কেজি। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বিখ্যাত নিলাম সংস্থা সথেবিজে ৪৩ লাখ ডলারে এটি বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫২ কোটি টাকারও বেশি।

বিবিসি জানিয়েছে, পাথরটির বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে এডব্লিউএ-১৬৭৮৮। ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর নাইজারের আগাদেজ অঞ্চলের চিরফা ওয়েসিস থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার পশ্চিমে পাথরটিকে খুঁজে পান অজ্ঞাত এক উল্কাপিণ্ড শিকারি। পরে স্থানীয় সম্প্রদায় এটি এক আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে। ওই ব্যবসায়ী পরে এটিকে ইতালির আরেজ্জোর একটি ব্যক্তিগত গ্যালারিতে পাঠান। সেখানে ইতালির ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের খনিজবিদ্যার অধ্যাপক জিওভান্নি প্রাতেসির নেতৃত্বে একটি গবেষক দল পাথরটির গঠন ও উৎস পরীক্ষা করে। কিছু সময় এটি ইতালির রোমে স্পেস এজেন্সিতেও প্রদর্শিত হয়।

সম্প্রতি এটিকে নিউইয়র্কে নিলামে তোলা হয়, যদিও এর দুটি টুকরা গবেষণার জন্য ইতালিতে রেখে দেওয়া হয়। নিলাম সংস্থা সথেবিজ দাবি করেছে, সব আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পাথরটি রপ্তানি ও পরিবহন করা হয়েছে এবং সব নথি ঠিকঠাকই আছে। তবে নাইজার সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই রপ্তানির বৈধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে এবং সম্ভাব্য অবৈধ আন্তর্জাতিক পাচারের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে।

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাইজারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের গবেষণা সম্পর্ক থাকা পল সেরেনো এই ঘটনাকে ‘দুঃসাহসী’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি নাইজারের ঐতিহ্য রক্ষার আইনের কথা উল্লেখ করে বলেন, খনিজ নমুনা এতে অন্তর্ভুক্ত হলেও উল্কাপিণ্ডের নাম সরাসরি নেই। তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, কোনো দেশের সাংস্কৃতিক বা প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের অংশ বিনা অনুমতিতে নিয়ে যাওয়া যায় না।

নিলামে উল্লেখ করা হয়েছে—অজ্ঞাত এক ব্যক্তি এটি বিক্রি করছেন এবং যিনি এটি কিনেছেন, তাঁর পরিচয়ও গোপন রাখা হয়েছে। তবে বিক্রির অর্থের কোনো অংশ নাইজার পেয়েছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

বিশ্বজুড়ে উল্কাপিণ্ডের ব্যবসাকে অনেকেই শিল্পবাজারের সঙ্গে তুলনা করেন—বিরলতা ও সৌন্দর্য এসব উল্কার মূল্য বাড়াতে সাহায্য করে। আর সাহারার মতো শুষ্ক ও জনবসতিহীন এলাকায় উল্কাপিণ্ড সহজে সংরক্ষিত থাকে, তাই ওই অঞ্চলটিতে উল্কাশিকারীদের কার্যক্রম বেশি। মরক্কোতেও বিগত দুই দশকে একধরনের ‘সাহারান গোল্ড রাশ’ দেখা গিয়েছিল। পরে সেখান থেকে শত শত উল্কাপিণ্ড আন্তর্জাতিক বাজারে চলে যায়।

পল সেরেনোর আশা করছেন, সথেবিজের এই বিক্রির কারণে নাইজারের সরকার হয়তো আরও সক্রিয় হবে এবং শিলাটি যদি কখনো কোনো জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়, তবে সেখানে এই বিতর্কের কথাও স্বীকার করতে হবে।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button