শিরোনাম

মহাসড়কে লাশ রেখে বিক্ষোভ, জামাই-শ্বশুর হত্যায় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মহাসড়কে লাশ রেখে বিক্ষোভ, জামাই-শ্বশুর হত্যায় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী আজ রোববার দুপুরে তারাগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এদিকে আজ সন্ধ্যায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে রূপলালের লাশ রেখে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।

গতকাল শনিবার রাতে তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় গণপিটুনিতে রূপলাল দাস (৪০) ও প্রদীপ দাস (৩৫) নিহত হন। সম্পর্কে তাঁরা ভাগনি জামাই-শ্বশুর। পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল থেকে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এরপর আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রূপলালের লাশ বাড়িতে আনার পর তা মহাসড়কের বেলতলী এলাকায় রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকাবাসী। এতে সড়কের দুই ধারে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

বিক্ষোভকারীরা দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। স্থানীয় সমাজসেবক সাবু খান বলেন, ‘রূপলাল নিরপরাধ। তাকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। সে বাঁচার জন্য অনেক আকুতি করেছে। তাকে পুলিশকে, সেনাবাহিনীকে দেওয়ার অনুরোধ করেছিল। কেউ তাঁর কথা শোনেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’

ঘনিরামপুর এলাকার বাসিন্দা নান্নু মিয়া বলেন, ‘আমরা রূপলাল হত্যার বিচার চাই। আসামিদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সাহস না পায়।’

তারাগঞ্জ পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পাপন দত্ত বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে রূপলাল ও প্রদীপ লালের হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আতে হবে।’

পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ইউএনওর আশ্বাসে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে এলাকাবাসী।

তারাগঞ্জ থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়, রূপলাল রবিদাস পেশায় জুতা সেলাই করতেন তারাগঞ্জ বাজারে। শনিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে মিঠাপুকুরের ছরান বালুয়া এলাকা থেকে ভাতিজি জামাই প্রদীপ লালকে নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাঁদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরই একপর্যায়ে সন্দেহভাজনেরা প্রদীপ লালের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় এবং কিছু ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে উত্তেজিত হয়ে রূপলাল ও প্রদীপ লালকে বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে পাঁচ-সাত শ মানুষ লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁদের কান দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। তাঁদের তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রূপলালকে মৃত ঘোষণা করেন এবং প্রদীপ লালকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠান। সেখানে প্রদীপ লাল ভোর ৪টায় মারা যান।

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ‘নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। তদন্ত কার্যক্রম চলছে। কিছু আলামত পেয়েছি, সেগুলো যাছাই-বাছাই চলছে।’


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button