শিরোনাম

মোবাইল ব্যবহারে বিধিনিষেধ, ক্ষুব্ধ হয়ে মঠ ছাড়লেন ৩০ বৌদ্ধ সন্ন্যাসী

মোবাইল ব্যবহারে বিধিনিষেধ, ক্ষুব্ধ হয়ে মঠ ছাড়লেন ৩০ বৌদ্ধ সন্ন্যাসী

চীনের ঐতিহ্যবাহী শাওলিন মঠে নতুন বিধিনিষেধ চালু হওয়ার পর ৩০ জনেরও বেশি সন্ন্যাসী ও কর্মচারী মঠ ছেড়ে চলে গেছেন। নতুন নিযুক্ত মঠাধ্যক্ষ শি ইয়েইনলে কঠোর নিয়ম চালু করায় এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। নতুন নিয়মে মোবাইল ব্যবহারের সময় কমানো, কঠোর খাদ্যাভ্যাস এবং দীর্ঘ কর্মঘণ্টা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মঠের প্রধান ছিলেন শি ইওংক্সিন। সম্প্রতি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন ৫৯ বছর বয়সী শি ইয়েইনলে। এর আগে শি ইওংক্সিনের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি ও যৌন অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে এবং বর্তমানে তিনি তদন্তাধীন। গত ২৯ জুলাই শি ইয়েইনলে মঠাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঁচটি বড় ধরনের সংস্কারের ঘোষণা দেন, সেগুলো হলো:

  • বাণিজ্যিক প্রদর্শন বন্ধ করা।
  • উচ্চ ব্যয়ে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা।
  • মঠ প্রাঙ্গণের দোকানপাট সরিয়ে ফেলা।
  • চাষাবাদের মাধ্যমে সন্ন্যাসীদের স্বাবলম্বী করে তোলা।
  • আয়ের বণ্টন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা।

শি ইয়েইনলে অভিযোগ করেন, সন্ন্যাসীরা আধ্যাত্মিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁরা ঠিকমতো ধ্যান বা কাজ কোনোটাই করছেন না। উদাহরণ হিসেবে তিনি ধ্যানকক্ষে খাবার আনা এবং প্রার্থনার সময় পপ গান শোনার কথা উল্লেখ করেন।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সন্ন্যাসীদের প্রতিদিন ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে সকালের প্রার্থনায় যোগ দিতে হবে। এরপর চাষাবাদ এবং জেন মার্শাল আর্ট অনুশীলন করতে হবে। মোবাইল ফোন এখন থেকে একটি কেন্দ্রীয় স্টোররুমে রাখা হবে এবং বিনোদনের সব মাধ্যম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্ক্রিন টাইম কমিয়ে মাত্র ৩০ মিনিটে আনা হয়েছে। নতুন ‘বটম-টিয়ার এলিমিনেশন সিস্টেম’ অনুযায়ী, কোনো সন্ন্যাসী পরপর তিন মাস মূল্যায়নে ব্যর্থ হলে তাঁকে মঠ ছাড়তে হতে পারে।

এই কঠোর নিয়ম চালু হওয়ার পর পদত্যাগের ঢেউ ওঠে। তবে এই সন্ন্যাসী ও কর্মচারীরা অন্য কোনো মঠে স্থানান্তরিত হয়েছেন নাকি সম্পূর্ণভাবে মঠ ছেড়ে গেছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

শাওলিন মঠ শুধু একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবেই নয়, এর মার্শাল আর্ট ও সংস্কৃতির জন্যও বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। জেট লি অভিনীত ১৯৮২ সালের চলচ্চিত্র ‘দ্য শাওলিন টেম্পল’-সহ অসংখ্য সিনেমা ও টিভি নাটকে এর উল্লেখ রয়েছে।

পূর্বতন মঠাধ্যক্ষ শি ইওংক্সিন ১৯৯৯ সাল থেকে মঠাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি একজন ‘সিইও মঠাধ্যক্ষ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। কুংফু শো ও পণ্যসামগ্রীর বাণিজ্য করার জন্য সমালোচিত হয়েছেন তিনি। গত মাসে তাঁর বিরুদ্ধে মঠের তহবিল আত্মসাৎ ও একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে সন্তান ধারণের অভিযোগ ওঠে।

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button