বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ডুবছে আধা পাকা আউশ ধান, দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা


টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় নদী, খাল ও বিলের পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকদের ঘাম ঝরানো আউশ ধান। এখনো ধান কাটা শুরু হয়নি, ফলে ফসল হারানোর আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাজারো কৃষক।
সরেজমিন শশীদল, ব্রাহ্মণপাড়া সদর ও চান্দলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বাগড়া, নাগাইশ, দেউশ, ধান্যদৌল, নাইঘর ও চারাধারিসহ অনেক এলাকায় তিন থেকে চার ফুট পর্যন্ত পানি বেড়েছে। বেশ কিছু মাঠ ইতিমধ্যে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে আউশ ধানের জমিগুলো।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণপাড়ায় ৫ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। একই সঙ্গে আমন ধানের বীজতলা তৈরির প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সেই পরিকল্পনাও এখন অনিশ্চয়তার মুখে।
নন্দীপাড়া এলাকার কৃষক সুলতান মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। ধান এখনো পাকেনি, মাত্র পুষ্ট হতে শুরু করেছে। আরেকটু পানি বাড়লেই সব ডুবে যাবে। চোখের সামনেই ধান ডুবে যেতে দেখা যে কতটা কষ্টের, তা কেবল কৃষকই বুঝতে পারে।’
একই এলাকার কৃষক আবুল হাশেম বলেন, ‘গত বছরও আমার ৪৫ শতক জমির ধান বন্যায় তলিয়ে গিয়েছিল। এবারও সেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফসল হারালে না খেয়ে থাকতে হবে, আবার নতুন করে চাষের জন্য টাকা জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়বে।’
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। খাল-জলাশয়ের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। আশা করছি, বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যেসব কৃষকের ধান আধা পাকা বা কাটার উপযোগী, তারা যেন দ্রুত ধান কেটে ফেলেন সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’