শিরোনাম

বিসিবির পরিচালনা বিভাগ থেকে কেন সরানো হলো শাহরিয়ার নাফীসকে

বিসিবির পরিচালনা বিভাগ থেকে কেন সরানো হলো শাহরিয়ার নাফীসকে

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমিনুল ইসলাম বুলবুল ঘোষণা দিয়েছিলেন—বিসিবির কার্যক্রমে গতি আনতে কিছু বিভাগ এবং সাংগঠনিক কাঠামোয় রদবদল করবেন। এবার সেই ঘোষণার বাস্তব রূপ দেখা গেল।

বিসিবি সভাপতি হওয়ার দুই মাসের মধ্যেই বোর্ডের অভ্যন্তরীণ কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনলেন বুলবুল। বোর্ডের চারটি বিভাগে একযোগে রদবদল হয়েছে। সবচেয়ে আলোচিত বদলটি হয়েছে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে। ছয় বছর ধরে এই বিভাগের ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা শাহরিয়ার নাফীসকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে পাঠানো হয়েছে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটে।

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ পদের শূন্যস্থান পূরণ হয়েছে জামাল বাবুকে দিয়ে। জামাল বাবু বিসিবির এইচপি ইউনিটে টানা পাঁচ বছর কাজ করেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই এখন তিনি পরিচালনা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন।

শাহরিয়ার নাফীসকে সরানো নিয়ে বিসিবির অভ্যন্তরে চলছে নানা আলোচনা। বোর্ডের ভেতরেই অনেকে মনে করছেন, এটি শুধুমাত্র স্বাভাবিক প্রশাসনিক রদবদল নয়। বিশেষ করে, সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের খালাতো ভাই হওয়ায় নাফীসকে পরিকল্পিতভাবে সরানো হয়েছে কিনা, এ নিয়ে কানাঘুষা চলছে।

নাফীস নিজেও বিসিবির চাকরি করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কখনো কখনো বিসিবির বিভিন্ন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে খোলামেলা সমালোচনা করতেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গত ১০ মাস ধরে খেলতে না পারা সাকিব আল হাসানের কিছু দারুণ মুহূর্ত ও পারফরম্যান্স নিয়ে ফেসবুকে নাফীস পোস্ট করতেন। নাফীসের এই প্রকাশ্য অবস্থানও বোর্ডের শীর্ষ মহলে অস্বস্তি তৈরি করেছিল বলে মনে করেন অনেকেই। তাতে প্রশ্ন উঠছে, এমন কোনো সমালোচনার ফলেই কি তাঁকে পরিচালনা বিভাগের মতো প্রভাবশালী পদ থেকে সরিয়ে তুলনামূলক নিরুত্তাপ এইচপি ইউনিটে পাঠানো হয়েছে?

২০১৯ সালে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। সাবেক ম্যানেজার সাব্বির খানের কাছ থেকে কাজ শিখে ধাপে ধাপে নিজেকে দক্ষ প্রমাণ করেন। খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনা, সফর পরিকল্পনা, জাতীয় দল ও ‘এ’ দলের কার্যক্রম সমন্বয়সহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সফলভাবে সামলেছিলেন তিনি। হঠাৎ তাঁর এই বদল স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন না বিসিবির অনেকে।

যদিও বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটা রুটিন রদবদলেরই অংশ। সূত্রে জানা গেছে, কাজের গতি আনতেই এমন রদবদল। যাঁরা অনেক দিন ধরে একই বিভাগে ছিলেন, তাঁদের অন্যত্র দায়িত্ব দিয়ে কাজের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

পরিচালনা বিভাগে বড় রদবদলের পাশাপাশি বিসিবির আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে পরিবর্তন আনা হয়েছে। গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ম্যানেজার আবু ইমাম মো. কাউসারকে সরিয়ে টুর্নামেন্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগে আনা হয়েছে আরিফুল ইসলামকে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটিতে কাজ করেছেন। এই তিনটি বড় রদবদল নিয়ে বিসিবির অভ্যন্তরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও বোর্ডের উচ্চপর্যায়ের কর্তাদের দাবি—কাজের গতি, নতুন ভাবনা এবং অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য রক্ষাই এর মূল উদ্দেশ্য। এসব বদল কতটা কার্যকর হয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button