শিরোনাম

‘দল যখন বিপদে পড়ে তখন নিচে থেকে যেন অবদান রাখতে পারি’

‘দল যখন বিপদে পড়ে তখন নিচে থেকে যেন অবদান রাখতে পারি’

প্রশ্ন: এ বছর ৮ ইনিংসে ১২ উইকেট। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে কতটা তৃপ্ত?

শরীফুল ইসলাম: যতটুকু খেলেছি, আলহামদুলিল্লাহ ভালোই খেলেছি। বছরের বাকি সময়ে চোটমুক্ত থেকে মাঠে থাকতে চাই। আরও ভালো করতে চাই। একজন পেসারের কাজই হলো দলের জয়ে অবদান রাখা। কয়েক মাস আগে চোটে ভুগেছি। এখন ফিট। চেষ্টা করছি নিজেকে ফিট রাখার। যদি সামনের ম্যাচগুলোয় ফিট থাকতে পারি, তাহলে আরও অনেক উইকেট নিতে পারব।

প্রশ্ন: আপনাকে ও তাসকিনকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানো হয়েছে। রোটেশন পলিসিতে আপনি সন্তুষ্ট নাকি নিয়মিত একাদশে থাকতে বেশি আগ্রহী?

শরীফুল: আমি তো চোট থেকে ফিরে এসেছি। ম্যানেজমেন্ট চাচ্ছে যেন আমি দীর্ঘ সময় খেলতে পারি। এ জন্যই রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। একজন খেলোয়াড় হিসেবে চোটে পড়তেই পারি। তবে কীভাবে ফিট হয়ে ফিরব, সেটা আমরা ম্যানেজ করতে পারি। আমি, তাসকিন ভাই—সবাই ট্রেনারের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করছি। ফলও পাচ্ছি। উইকেটও আসছে। পুরোপুরি ফিট হলে আবার তিন ফরম্যাটেই নিয়মিত হতে পারব বলে আশা করছি।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান সিরিজেই খেলেছেন। টানা দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাংলাদেশ জিতেছে। কোন সিরিজটা বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবে আপনার কাছে?

শরীফুল: একজন ক্রিকেটারের কাছে খেলার সুযোগ পাওয়াটাই উপভোগ্য। আমি যেখানেই খেলেছি, চেষ্টা করেছি অবদান রাখতে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে দলের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আমাদের জন্য এটা অনেক বড় অর্জন। আশা করি সামনে আরও ভালো করব।

প্রশ্ন: সামনে এশিয়া কাপ। এর আগে প্রস্তুতির জন্য আরেকটি সিরিজ খেলার অপেক্ষায় নিশ্চয়ই?

শরীফুল: অবশ্যই দরকার। বড় টুর্নামেন্টের আগে ম্যাচ খেলতে পারলে প্রস্তুতি আরও ভালো হয়। তবে সিদ্ধান্ত বোর্ডের। যদি বিসিবি সিরিজ আয়োজন করতে পারে, আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত থাকব। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকেই আমরা ফিটনেস ট্রেনিং শুরু করব।

প্রশ্ন: লিটন দাসের অধিনায়কত্বে খেলেছেন। একজন বোলার হিসেবে লিটনের নেতৃত্বের কোন দিকটি বেশি ভালো লেগেছে?

শরীফুল: শুধু লিটন ভাইয়ের কথা বললে অন্যদের প্রতি অবিচার হবে। সবাই একেকভাবে দারুণভাবে দলকে পরিচালনা করেন। আমি সবার অধিনায়কত্বই উপভোগ করি। তবে লিটন ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা আলাদা। খেলাধুলার বাইরেও আমরা কিছু ক্রিকেটার একসঙ্গে ডিনারে যাই, পরিকল্পনা করি। এতে অধিনায়ক-দলের রসায়নটা আরও ভালো হয়, যার প্রভাব মাঠেও পড়ে।

প্রশ্ন: জাতীয় দলে এখন তানজিম সাকিব, সাইফউদ্দিনের মতো পেস বোলিং অলরাউন্ডাররা আছেন। দুই দিন আগে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দলের সিনিয়র সহকারী কোচ সালাহ উদ্দীনও বোলারদের ব্যাটিংয়ের উন্নতির কথা বলছিলেন। ব্যাটিং নিয়ে আপনি নিয়মিত আলাদা কাজ করেন?

শরীফুল: হ্যাঁ, আমরা সবাই ব্যাটিংয়ে উন্নতি করতে চাই। দল যখন বিপদে পড়ে, তখন যেন নিচের দিক থেকে একটা অবদান রাখতে পারি, সে জন্য মনোযোগ দিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন করছি। লোয়ার অর্ডার থেকেও যেন ম্যাচের মোড় ঘোরানো যায়—এই চেষ্টা থাকছে।

প্রশ্ন: বিপিএলের পর জাতীয় দলেও পেস বোলিং কোচ শেন টেইটের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ মিলছে। এবার অভিজ্ঞতা কেমন হচ্ছে?

শরীফুল: টেইট ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা অনেক দিনের। তিনি যখন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে ছিলেন, তখন থেকেই কাজ করছি। জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার আগেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। আমার স্কিল, মানসিকতা, ডেথ ওভারে বোলিং—সবকিছু নিয়ে কাজ করেছেন। সাম্প্রতিক সিরিজগুলোয় আমরা ডেথ ওভারে ভালো করছি, রান কম দিচ্ছি। এটা তাঁর পরিকল্পনার ফল। ডেথ ওভারেই আসল পরীক্ষা হয় একজন পেসারের। ওখানে মানসিক দৃঢ়তা সবচেয়ে বেশি দরকার।

প্রশ্ন: বছরের প্রথমার্ধে ভালো করেছেন। কীভাবে শেষ করতে চান?

শরীফুল: আল্লাহর রহমত ছাড়া কিছুই সম্ভব না। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদি চোটমুক্ত থাকতে পারি, তাহলে এই ক্যালেন্ডার বছরে দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। গত (২০২৪ টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপে খেলতে না পেরে খুব কষ্ট পেয়েছি। আমার জায়গায় সাকিব (তানজিম) দারুণ খেলেছে—আমারও ভালো লেগেছে। এবার সেই অভাব ঘোচাতে চাই।

প্রশ্ন: শেখ মেহেদী হাসান, তানজিম সাকিবদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে নাকি অনেক মজা করেন?

শরীফুল: মেহেদী ভাই ভীষণ মজার মানুষ। সবাই ওনার সঙ্গে মজা করতে পছন্দ করে। তিনি সহজেই চটে যান, কিন্তু বেশিক্ষণ রাগ থাকে না। আবার স্বাভাবিক হয়ে যান। ড্রেসিংরুমে অনেক মজা হয় আমাদের। তিনি আমাদের অনেক সিনিয়র হলেও কখনো সেটা বুঝতে দেন না। আমরা বলি, আপনার চেহারা দেখে সিনিয়র মনে হয় না (হাসি)। এগুলোই আমাদের টিম স্পিরিট বাড়িয়ে দেয়।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button