বাগেরহাটে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ নানা দল, কর্মসূচি ঘোষণা


বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি কমানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদ উঠেছে। আগের আসন বহালের দাবিতে সর্বদলীয় রাজনৈতিক পরিষদ গঠন করা হয়েছে। পরিষদ দাবি আদায়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে সর্বদলীয় রাজনৈতিক পরিষদ। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, জেলা আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম, সাবেক জেলা সভাপতি এম এ সালাম, জেলা জামায়াতের আমির রেজাউল করিম, শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য শেখ মঞ্জুরুল হক রাহাদ, খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন, বিএনপির নেতা জাকির হোসেন, খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, খান মনিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে আগামী শনি ও রোববার মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আমরা জেলায় সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে কর্মসূচি নিয়েছি। শনি ও রোববার সকাল ১০টায় দশানী মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল হবে এবং জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।’
নির্বাচন কমিশনের এই আসন বিন্যাসকে ভৌগোলিকভাবে হাস্যকর দাবি করে বিএনপির নেতা মনিরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যে আসন বিন্যাস প্রস্তাব করেছে তা ভৌগোলিক দিক দিয়ে খুবই অমূলক। বাগেরহাট-২ আসনের সঙ্গে রামপালকে যুক্ত করা হয়েছে, যা সদর শহর থেকে অনেক দূরে। অন্যদিকে মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলাকে একত্র করে একটি মাত্র আসন করার যে প্রস্তাব, তা জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকেও সম্পূর্ণ কাণ্ডজ্ঞানহীন। আমরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি এবং দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাব।’
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির রেজাউল বলেন, ‘বাগেরহাটের চারটি আসন রক্ষায় আমরা একসঙ্গে কাজ করব। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বাগেরহাটের স্বার্থে আমরা দলমতের ঊর্ধ্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ।’
বিএনপির নেতা সালাম বলেন, ‘আসন কমানোর প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন বাতিল না করলে আমরা বাগেরহাটকে অচল করে দেব। বাগেরহাটের সঙ্গে সরকারের সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেব। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাখব।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামীমুর বলেন, ‘ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন একটি দলকে বিশেষ সুবিধা দিতে ১২৫টি আসনের সীমা পরিবর্তন করেছিল। ১৯৭০ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি আসনেই নির্বাচন হয়ে আসছে। এবারও চারটি আসনে নির্বাচন হবে, এটিই জনগণের প্রত্যাশা। এর ব্যতিক্রম হলে নির্বাচন কমিশনের হঠকারী সিদ্ধান্ত জনগণ মেনে নেবে না। বাগেরহাটের চারটি আসনের একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এটা বহাল রাখতে আমরা সব ধরনের চেষ্টা করব।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাকির হোসেন বলেন, ‘যদি আন্দোলনের ফলে নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তাহলে আমরা আদালতের শরণাপন্ন হব। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাগেরহাটের চারটি আসনে নির্বাচন হবে বলে আশা করি।’