শিরোনাম

‘ভালো খেললে মাথায় তুলে নাচবে, না হলে নামিয়ে দেবে’

‘ভালো খেললে মাথায় তুলে নাচবে, না হলে নামিয়ে দেবে’

দলের পারফরম্যান্স যেমনই হোক, কোচকে সব সময় থাকতে হয় তটস্থ। দল ভালো করলে যেমন হাততালি পাওয়া যায়, তেমনি বাজে পারফরম্যান্সে সব দোষ যেন কোচের ঘাড়ের ওপর গিয়ে পড়ে। বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন তা-ই মনে করেন।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ উপমহাদেশের ক্রিকেটার ভক্ত-সমর্থকদের কাছ থেকেও শুনতে হয় অনেক তির্যক মন্তব্য। শারজায় এ বছরের মে মাসে বাংলাদেশ-আরব আমিরাত টি-টোয়েন্টি সিরিজের একটি ম্যাচের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। বাংলাদেশের হারের পর সালাহ উদ্দীন যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, গ্যালারি থেকে ছুটে আসা দর্শকদের বাজে মন্তব্যে শামীম পাটোয়ারী তেড়ে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালাহ উদ্দীন বলেন,‘এটা স্বাভাবিক। মানুষের প্রত্যাশা এখন অনেক বেশি। আমাকে এটা মেনে নিতেই হবে। যখন এই দায়িত্বে এসেছি, তখন নিজেও জানতাম, এখানে সাফল্য পেলে আমাকে মাথায় তুলে নাচবে। আবার সাফল্য না পেলে মাথা থেকে নামিয়েও দেবে। সাফল্য-ব্যর্থতা মিলিয়ে দলকে কীভাবে এগিয়ে নিতে পারছি, এটাই মূলকথা।’

মে মাসে আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের পর হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে টানা ৬ ম্যাচ হেরেছিল লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। এখান থেকেই দারুণভাবে ঘুদে দাঁড়ায় এশিয়ার এই দল। টানা চার টি-টোয়েন্টি জিতে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতেন লিটন-তানজিদ হাসান তামিমরা। শামীম পাটোয়ারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়ে ছিলেন অনবদ্য। আর মোস্তাফিজুর রহমান ঘরের মাঠে বিষাক্ত স্লোয়ার-কাটারে বিভ্রান্ত করেছেন পাকিস্তানি ব্যাটারদের।

সালাহ উদ্দীনের মতে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা থাকলে বড় টুর্নামেন্টেও বাংলাদেশ দারুণ কিছু করতে পারবে। বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘ছেলেদের ভেতরে পরিবর্তন আসছে কি না, ছেলেরা শিখছে কি না ভালোভাবে—সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এক দিনেই তো সব পরিবর্তন করা যাবে না। প্রতিটি বিষয়ের ধাপ আছে। মনে হয়, দিন শেষে আমার কাছে মানুষ ফলটা চাইবে। যেহেতু খুব বেশি পিছিয়ে নেই আর যদি তাড়াতাড়ি ঘুরে দাঁড়াতে পারি, বড় টুর্নামেন্টেও আমরা ভালো করব।’

বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ হওয়ার পর সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি দেখেছেন সালাহ উদ্দীন। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যায় বাংলাদেশ। শুধু আইসিসির ইভেন্টই নয়, জিম্বাবুয়ের কাছেও বাংলাদেশ ঘরের মাঠে টেস্ট হেরেছে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় মূলত বাংলাদেশ এ বছর জয়ের চেয়ে অনেক বেশি ম্যাচ হেরেছে।

সিনিয়র সহকারী কোচ হলেও বাংলাদেশের ব্যাটিংটা দেখভাল করেন সালাহ উদ্দীন। লিটন-তানজিদ তামিমদের ব্যর্থতায় সালাহ উদ্দীনকে অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হচ্ছে। জাতীয় দলে মধুচন্দ্রিমা শেষে এখন তাহলে কি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি—এমন প্রশ্নের উত্তরে আজকের পত্রিকাকে বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘ওভাবে চিন্তা করাটা ভুল হবে। এই আট মাসে আমরা হয়তো কিছু সাফল্য পেয়েছি। কিছু জায়গায় বেশি খারাপ করে ফেলছি। নির্দিষ্টভাবে বললে অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে, আমরা কয়েক ঘণ্টা খারাপ খেলছি। তাতেই টেস্ট হেরে গেছি। আরব আমিরাতের সঙ্গে যে সিরিজটা হেরেছি, ওটা বড় ধাক্কা ছিল। এ ছাড়া আমরা প্রতিটি জায়গায় ভালো খেলেছি।’

শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলে মনে করেন সালাহ উদ্দীন। আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘কিছু ফল এসেছে। আরও কিছু ফল এলে দলের জন্য আরও ভালো হতো। তাতে দলের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়ত। এর মধ্যে আমরা যেসব সিরিজ জিতেছি, সেগুলো দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আমার মনে হয়, ছেলেদের জেতার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। আমরা চাচ্ছি, বড় টুর্নামেন্টে ভালো খেলি। সবাই সেভাবেই এগোচ্ছি।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button