শিরোনাম

গাজায় অনাহারে মরল আরও ১৪ ফিলিস্তিনি, নিহত বেড়ে প্রায় ৬০ হাজার

গাজায় অনাহারে মরল আরও ১৪ ফিলিস্তিনি, নিহত বেড়ে প্রায় ৬০ হাজার

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট এতটাই তীব্র যে, এরই মধ্যে অঞ্চলটিতে আর কোনো খাবারই পাওয়া যাচ্ছে। ফলে, স্থানীয়রা এক দুর্ভিক্ষময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে অঞ্চলটি না খেতে পেয়ে মারা গেছে আরও অন্তত ১৪ জন। আর সামগ্রিকভাবে অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত বেড়ে প্রায় ৬০ হাজারের কাছে পৌঁছে গেছে।

তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘গত এক দিনে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে অনাহারে আক্রান্ত হয়ে ১৪ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশু, যারা মারাত্মক ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে মারা গেছে।’

এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকটে প্রাণ হারালেন অন্তত ১৪৭ জন। নিহতদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু। গাজার নাগরিকদের মানবিক পরিস্থিতি বর্তমানে চরমে পৌঁছেছে। ইসরায়েল গত ১৮ বছর ধরে গাজা উপত্যকায় কঠোর অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে তারা গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, ফলে খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। এতে করে দুর্ভিক্ষ আরও গভীর হয়েছে।

এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরায়েল তা অগ্রাহ্য করে গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের বিমান ও স্থল অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। খাদ্য, পানি, চিকিৎসা—সবকিছুরই তীব্র সংকট চলছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মামলা চলছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে)।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বিশ্ব যদি দ্রুত ও কার্যকরভাবে এগিয়ে না আসে, তাহলে গাজায় দুর্ভিক্ষে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে—বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button